জৈন-হাওয়ালা কাণ্ডে জড়িত ধনকর৷ ২৮ জুন সাংবাদিক বৈঠক থেকে ঠিক এই অভিযোগ তুলেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপর থেকেই জৈন হাওয়ালা মামলা নিয়ে সরগরম বাংলার রাজনীতি। ইতিমধ্যেই এই মামলা প্রকাশ্যে আনা বেশ কিছু সাংবাদিক মমতার দাবিকে সমর্থন করে তোপ দাগেন ধনকরের বিরুদ্ধে।
হার্ডনিউজ সংবাদপত্রের সম্পাদক সঞ্জয় কাপুর জৈন-হাওয়ালা মামলার সময় ব্লিৎজ এর দিল্লী ব্যুরো চিফ ছিলেন। তখনই তিনি এই দুর্নীতি উন্মোচন করেন। জৈন হাওয়ালা নিয়ে ১৯৯১ সালে প্রকাশিত তাঁর বই ‘ব্যাড মানি, ব্যাড পলিটিক্স’- র প্রচ্ছদ টুইট করেন সাংবাদিক। সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগও করেন।
এই বইয়ে সঞ্জয় বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করেছেন কীভাবে জৈন ভাইয়েরা আশির দশকে সাধারন কন্ট্রাক্টর থেকে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠে। দিল্লীতে কোন বড় কাজ তাদের ছাড়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই ঘটনায় কী করে রাজনীতি ঢুকে পড়ে তাও তিনি পরিষ্কার করেছেন সেই বইটিতে। টুইটে তিনি লেখেন, ‘আমার এই বইয়েই ১৯৯১ সালে হাওয়ালা দুর্নীতি উন্মোচন করেছিলাম। জগদীপ ধনকরের কথাও উল্লেখিত আছে এই বইয়ে।’
উল্লেখ্য, সঞ্জয় ছাড়াও জৈন হাওয়ালা-কাণ্ডকে ফের জনসমক্ষে তুলে ধরার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান আরেক সাংবাদিক বিনীত নারায়ণ। বিনীতের অভিযোগ, জৈন ভাইদের উদ্ধার হওয়া ডায়েরিতে তৎকালীন ‘প্রাক্তন মন্ত্রী’ ধনখড়ের নামে ৫ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়টি লেখা ছিল। বিনীত বলেন, ‘নৈতিকতার কারণে ধনখড়ের অবিলম্বে রাজ্যপাল পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া উচিত।’
আজ একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে সঞ্জয় কাপুরের এই বইয়ের কথা উল্লেখ করেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। তিনি বই থেকে উদ্ধৃত করে বলেন, ৩৩ নম্বরে জগদীপ ধনখড়ের নামের উল্লেখ আছে, আর তার নামের পাশে লেখা ৫.২৫। তাঁর প্রশ্ন, এই জগদীপ ধনকর আর রাজ্যপাল একই লোক নন তো? এই বইয়ের আরেকটি অংশ উদ্ধৃত করে সুখেন্দুশেখর দাবি করেন, ধনকর হাওয়ালা কাণ্ডে ৩-৪ ইনস্টলমেন্টে ১০ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন।
এছাড়া, সুখেন্দুশেখর রায় একটি সংবাদপত্রের ছবি দেখিয়ে দাবি করেন জৈন হাওয়ালা কাণ্ডের মূল পাণ্ডা সুরেন্দ্র জৈন গত ২৯ জুন পরোলোকগমন করেছেন। তাঁর প্রশ্ন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংবাদিক বৈঠকের একদিনের মাথায় এই মৃত্যু কি নেহাৎ কাকতালীয় নাকি এটা প্যানিক অ্যাটাক? ২৯ জুনের পর থেকে এই বিষয়ে ধনখড় কেন মুখ খুলছেন না? যিনি কথায় কথায় টুইট করে বাংলাকে অপমান করেন, রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেন, তিনি কেন মৌনব্রত ধারণ করলেন?