নরেন্দ্র মোদী বার বার করোনা টিকা নেওয়ার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, করোনার বিরুদ্ধে টিকাকরণই একমাত্র অস্ত্র। তা সত্ত্বেও, দেশে দৈনিক টিকাকরণে ফের ধস নামল। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৭৩ শতাংশ কম হল টিকাকরণ। রবিবার সকালের পরিসংখ্যানে আগের ২৪ ঘণ্টায় যেখানে ৬৪ লক্ষ ২৫ হাজার ৮৯৩ জন টিকা পেয়েছিলেন বলে জানানো হয়, সোমবারের দেওয়া হিসাবে তা নেমে এসেছে মাত্র ১৭ লক্ষ ২১ হাজার ২৬৮-তে।
সব মিলিয়ে দেশে এখনও পর্যন্ত ৩২ কোটি ৩৬ লক্ষ ৬৩ হাজার ২৯৭ জন নাগরিক টিকা পেয়েছেন বলে জানিয়েছে কেন্দ্র সরকার। তাতে গোটা বিশ্বে টিকাকরণে ভারতই সবচেয়ে এগিয়ে বলে দাবি তুলতে শুরু করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, গত বছর ১৪ ডিসেম্বর থেকে টিকাকরণ শুরু করে আমেরিকা এখনও পর্যন্ত দেশের ৩২ কোটি ৩৩ লক্ষ ২৭ হাজার ৩২৮ জন নাগরিককে টিকা দিতে পেরেছে। টুইট করে স্বাস্থ্য মন্ত্রকও জানিয়েছে, “কোভিডের টিকাকরণে আর একটা মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলল ভারত। মোট টিকা দেওয়ায় আমেরিকাকে ছাপিয়ে গেল।”
এর পাশাপাশি টুইটারে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া, “ভারতের টিকাকরণ প্রকল্প আরও গতি পাচ্ছে। যাঁরা এই প্রকল্পকে চালনা করছেন, তাঁদের সকলকে অভিনন্দন। সার্বিক ও বিনামূল্যে টিকাকরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমরা।” এদিকে, বিজেপি-র মিডিয়া সেলের প্রধান অমিত মালব্য টুইটারে লেখেন, “দেরিতে শুরু করেও, কোভিডের টিকাকরণে আমেরিকাকে ছাপিয়ে গেল ভারত। দারুণ কাজ করেছে দেশ।”
কিন্তু বিজেপি নেতারা যে কথা উহ্য রাখছেন, তা হল, আমেরিকার জনসংখ্যা মোটে ৩২ কোটি ৮২ লক্ষ। সেই অনুযায়ী আমেরিকার প্রায় ১০০ শতাংশ নাগরিকই টিকা পেয়েছেন। এর মধ্যে দু’টি টিকাই পেয়ে গিয়েছেন ৪৬ শতাংশের বেশি মানুষ। ব্রিটেনের জনসংখ্যা মোট প্রায় ৬ কোটি ৬৬ লক্ষ। সেখানে দু’টি করে টিকা দেওয়ার কাজ জোর কদমে চলছে। সেই তুলনায় ভারতের জনসংখ্যা প্রায় ১৪০ কোটি। কিন্তু মোট জনসংখ্যার নিরিখে দেশে এখনও পর্যন্ত মাত্র ২২ শতাংশ মানুষ টিকা পেয়েছেন। তাই আমেরিকার সঙ্গে তুলনা নিতান্তই বালখিল্যতা ছাড়া আর কিছুই নয়।