সংগঠনের একাংশের কাজে সন্তুষ্ট নন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই নিষ্ক্রিয়, ক্ষমতালোভী কর্মীদের নাম ‘ঘ্যাঁচ’ করে কেটে দিতে তাঁর এতটুকু সময় লাগবে না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন নেত্রী। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের সাধারণ পরিষদের বর্ধিত সভায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর পরিশ্রমের নজির তুলে ধরে উপস্থিত প্রতিনিধিদের হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, ‘চায়ের দোকানে বসুন। মানুষের কী প্রয়োজন জানুন। দল সরকারে আছে বলে কিছু করব না! চলবে না’। বিধানসভায় গরহাজির থাকা দলীয় বিধায়কদের বেতন কাটার সুপারিশ করেছেন তিনি। এদিন সংগঠন প্রসঙ্গে শোনা গিয়েছে তাঁর কড়া ধমকের সুর।
ক্ষুব্ধ মমতা উপস্থিত শ্রোতৃমণ্ডলীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘৩৪ বছরে একটা ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্যপদ পাইনি। আপনাদের খালি চাই চাই। আর কথা চাইবেন। এই চাওয়াটা বন্ধ করুন। আপনাদের শরীরে তেজ কোথায়? আপনাদের তেজ এত তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যাচ্ছে কেন? ব্যক্তি স্বার্থে চাওয়াটা বন্ধ করুন। কারও ঘরে ভাত না জুটলে খবর নিন। অসুখ হলে তাকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। এটুকুও কি আমায় করে দিতে হবে? জেলায় গেলেই বলবেন, এক হাজার কোটি টাকার ব্রিজ চাই। আমি বলছি, মানুষের সঙ্গে ব্রিজ গড়ে তুলুন। চায়ের দোকানে বসুন। জানতে চান মানুষের কী প্রয়োজন। এটা চাই, ওটা চাই বলে আমাকে ব্লাকমেল করে লাভ নেই। টাকার কাছে মাথা নিচু করবেন না। বিজেপি বাংলায় টাকা ছড়িয়ে তৃণমূল কর্মীদের দলে টানতে চাইছে বলে অভিযোগ মমতার। তিনি বলেন, টাকা নিন, কিন্তু মর্যাদা পাবেন না। আমরা টাকা নিয়ে রাজনীতি করি না। আমি ছবি আঁকলেও বলবে চুরি করছি। কিন্তু দল চালাতে টাকা লাগে’।
দুর্দিনে যাঁরা তৃণমূলে ছিলেন, তাঁদের অনেকেই আজ দলীয় পরিসরের বাইরে। সেই ব্রাত্যদের দলের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন নেত্রী। বলেন, ‘দুর্দিনে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের দলের বাইরে রাখতে কারা কারসাজি করছে, আমি সব নজরে রাখছি। ভাববেন না, টাকা তোলার খবর দিদির কাছে যাবে না। নেতাই, লালগড়ে কী হচ্ছে, সব খবরই জানি’।