অসমের পর এবার ত্রিপুরা। বিজেপি শাসিত আরেক রাজ্যে গণপিটুনির নিন্দনীয় নজির। গবাদি পশু চোর সন্দেহে দিন কয়েক আগেই আসামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল। আর এবার ত্রিপুরায় তিন জন শিকার হলেন নৃশংসতার। কারণ সেই গবাদি পশু চোর সন্দেহ। সেই সন্দেহের বশেই তিনজনকে পিটিয়ে মারা হল বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার খোয়াই এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে প্রায় ৪৬ কিলোমিটার দূরে মহারাণীপুরে। গবাদি পশু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত হয় বিলাল মিয়াঁ (২৮), জায়েদ হোসেন (৩০) এবং সইফুল ইসলামের (১৮)।তিনজনই সিপাইজালা জেলার সোনামুড়া এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ সুপার কিরণ কুমারের কথায়, ছোট একটি ট্রাকে করে গবাদি পশু নিয়ে যাচ্ছিল ওই তিনজন। সেই সময়ই তাঁদের গবাদি পশু চোর সন্দেহে স্থানীয় বাসিন্দারা তাড়া করে। আর মহারাণীপুর গ্রামের কাছেই ওই তিনজনকে ধরে ফেলে গ্রামবাসীদের। সেখানেই তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হয়। ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়। অপর একজন পালিয়ে গেলেও তাঁকে ধরে ফেলে ফের মারধর করা হয়। তৃতীয় জনেরও ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, চম্পাহর থানার একটি গ্রাম থেকে বেশ কিছু গরু চুরি হয়েছিল সম্প্রতি। অনেকেরই তাই মনে হয়েছিল, ওই গরু চুরির ঘটনা এই তিনজন যুক্ত। সেই কারণেই তিনজনকে আটকায় গ্রামবাসীরা।
সম্প্রতি গরুচোর সন্দেহে আসামের তিনসুকিয়ায় গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছিল ৩৪ বছর বয়সি এক ব্যক্তির। মৃতের নাম শরৎ মোরন। খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই গোটা দেশে এই নিয়ে তীব্র আলোড়ন পড়ে যায়। ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্তে নেমে ১২ জনকে আটকও করেছে পুলিশ। মামলাও রুজু হয়েছে। মৃত শরতের কাকুর অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধি ৩০২ ও ৩০৪ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। তবে ওই ব্যক্তি গরু চুরি করেছিলেন কি না তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। এই প্রথম অবশ্য নয়, এর আগেও আসামে একাধিকবার গরুচোর সন্দেহে উত্তেজিত জনতার রোষের মুখে পড়তে হয়েছে অনেককে। এবার সেই তালিকায় নাম লেখাল ত্রিপুরাও।