বাঙালি খেদানোর রাজনীতি কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঙ্কার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনআরসি ইস্যুতে যেমন অসম থেকে বাঙালি খেদানোর প্রয়াস শুরু হয়েছে, তেমনই আবার ছত্তিশগড়ের দণ্ডকারণ্য থেকেও বঙ্গভাষীদের হটানোর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এরকম একটা প্রেক্ষাপটে মমতার এহেন হুঁশিয়ারি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
মতুয়াদের বড়মা বীণাপাণিদেবী শতবর্ষকে সামনে রেখে মতুয়া মহাসঙ্ঘ ঠাকুরনগরে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন বড় মা’র জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ই মঞ্চ থেকেই বাঙালি হটাও রাজনীতির বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান ফের স্পষ্ট করে মমতা প্রশ্ন তোলেন, ‘বাংলায় কথা বলাটা কি অপরাধ? তা না হলে শুধুমাত্র বেছে বেছে বাঙালিদের নাম এনআরসি থেকে বাদ দেওয়া হবে কেন?’ আসাম-সহ অন্য রাজ্যের বাঙালিদের আশ্বস্ত করে মমতা বলেছেন, জানবেন, বাংলা আপনাদের পাশে আছে’।
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, এই রাজ্যে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের সিংহভাগই হচ্ছেন নমঃশূদ্র। অসমের তিনসুকিয়ায় সম্প্রতি জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ দিয়েছেন এরকমই পাঁচ বঙ্গভাষী নমঃশূদ্র। ঘটনার পর থেকে আতঙ্কিত গোটা অসমের বঙ্গভাষীরা। বাংলা তো বটেই, এদিনের মহাসমাবেশে এসেছিলেন অসম, মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়ের মতো রাজ্যের মতুয়া সম্প্রদায়ের বঙ্গভাষী মানুষ। তাঁদের সবার সামনে বাঙালির ‘জাতিসত্তা’কে ক্ষুণ্ণ হতে না দেওয়ার যে বার্তা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন, তা রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সব মহলই। পাশাপাশি যে স্বতঃস্ফূর্ত সমাবেশ প্রত্যক্ষ করল ঠাকুরনগর, তা যে বিজেপির অস্বস্তি বাড়াবে সেটা বলাই বাহুল্য।