আগের বছর অবধিও বৃষ্টির সময় বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ রোজনামচা হয়ে গিয়েছিল দুর্গাপুরে। নিকাশি নালা উপচে জল ভাসিয়ে দিত রাস্তা, বাড়ি। সেই জল নামতে লেগে যেত দু’দিন। এবার সেখানে ভিন্ন ছবি। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে শ্রীনগরপল্লির নীচু এলাকায় জমা জল নেমে গিয়েছে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। তামলা নালা কানায় কানায় পূর্ণ হলেও আগের মতো সংলগ্ন এলাকা বানভাসি হয়ে ওঠেনি। এসবই সম্ভব হয়েছে শহরের নিকাশি ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের দরুন।
কেএমডিএ-র উদ্যোগে চলতি বছরের গোড়ায় তিনটি পর্যায়ে নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কারে কাজ শুরু হয়েছে দুর্গাপুরে। পুরসভার দাবি, এই বছরের শেষে কাজ মিটে গেলে দুর্গাপুরের বাসিন্দারা নিকাশি যন্ত্রণা থেকে অনেকটাই মুক্তি পাবেন। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা দু’নম্বর বরো চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ হালদার এই বিষয়ে বলেন, “নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি হলে জল জমবে না এলাকায়। যদিও বা জমে তাহলেও দ্রুত নেমে যাবে। অনেক চওড়া ও গভীর নিকাশি নালা তৈরি করা হচ্ছে।”
প্রতিবছর বর্ষা এলেই আতঙ্কে ভুগতে থাকেন দুর্গাপুরের বাসিন্দারা। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে পুরসভা কেএমডিএ-র সাহায্য নেয়। গত বছর কেএমডিএ-র একটি প্রতিনিধি দল দুর্গাপুরে এসে এখানকার নিকাশি ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে। তিনটি পর্যায়ে নিকাশি ব্যবস্থার চেহারা বদলের প্রস্তাব দেয় তারা। প্রথম পর্যায়ে তামলা নালার পূর্ণ সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে দু’নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে দুবচুড়িয়া থেকে গোপালমাঠ হয়ে তামলা পর্যন্ত চওড়া ও গভীর নিকাশি নালা তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। তৃতীয় ও শেষ পর্যায়ে ট্রাঙ্ক রোড থেকে তৈরি নিকাশি নালা শ্রীনগরপল্লির পাশে দিয়ে রাজমহল হয়ে তামলায় গিয়ে পড়বে।
এখন সেখানে জোরকদমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের কাজ চলছে। নিকাশি নালা আগের তুলনায় অনেক চওড়া ও গভীর করে তৈরি করা হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ের কাজ বেশ কিছুটা এগোলেও বর্তমানে বন্ধ আছে। এ প্রসঙ্গে মেয়র দিলীপ অগস্তি বলেন, “ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু লোকের গন্ডগোল হয়েছিল। সেই জন্য ঠিকাদার সংস্থা কাজ বন্ধ করে চলে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুর, আসানসোলের কিছু বিষয়ে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক হবে। তখন এই বিষয়ে কথা বলব।”