‘এনআরসি–র নামে আসাম থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের নাম বাদ দিয়ে নিম্নমানের রাজনীতি করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করলে হামলা চালানো হচ্ছে। এটাকে কখনই সমর্থন করি না’। গাইঘাটার ঠাকুরনগরে এসে এভাবেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি আসাম থেকে বিতাড়িত হওয়ার আশঙ্কায় ভোগা বাঙালিদের পাশে থাকারও আশ্বাস দিলেন তিনি।
মতুয়া সম্প্রদায়ের বড়মা বীণাপাণি ঠাকুরের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ঠাকুরনগরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি প্রথমে ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে বড়মাকে প্রণাম করেন। মুখ্যমন্ত্রী বড়মার হাতে রাজ্য সরকারের সর্বোচ্চ সম্মান ‘বঙ্গবিভূষণ’ তুলে দেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব মলয়কুমার দে, তথ্য–সংস্কৃতি সচিব বিবেক কুমার, মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ব্রাত্য বসু প্রমুখ বিশিষ্টজনেরা।
বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এনআরসি–র নামে অসম থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের নাম বাদ দিয়ে নিম্নমানের রাজনীতি করা হচ্ছে। এটা কখনই সমর্থন করি না। এ ব্যাপারে তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রীরা প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তারপরও যদি ওই রাজ্য থেকে বাঙালিদের উৎখাত করা হয়, পশ্চিমবঙ্গ তাঁদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করবে। তাঁদের পাশে থাকবে’।
মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রাণপুরুষ হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুর, প্রমথরঞ্জন ঠাকুর এবং তাঁর সহধর্মিণী বীণাপাণি ঠাকুরের সমাজের পিছিয়ে–পড়া মানুষের জন্য আন্দোলনের কথা তুলে ধরেন মমতা। তাঁদের এই কর্মকাণ্ডকে সম্মান জানাতে তাঁদের স্মৃতিতে ধন্য এই ঠাকুরনগর এলাকাকে আন্তর্জাতিক নগরে পরিণত করার কথা জানান তিনি। মমতা বলেন, ‘ইতিমধ্যেই এই এলাকায় পি আর ঠাকুরের নামে সরকারি মহাবিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে। হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে। তার জন্য ঠাকুরবাড়ি থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে গাইঘাটার চাঁদপাড়া এলাকায় কৃষি দপ্তরের অধীনস্থ ৮.৮ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। কৃষি দপ্তর থেকে জমিটি শিক্ষা দপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’ তাঁর কথায়, ‘খুব তাড়াতাড়ি এই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে। এছাড়া পর্যটন দপ্তরের পক্ষ থেকে ঠাকুরবাড়ি এবং সংলগ্ন এলাকার সৌন্দর্যায়নের জন্য দুটি গেট তৈরি করে গোটা এলাকা আলোয় সাজিয়ে তোলা হবে। যাতে বাইরে থেকে মানুষ এলে মতুয়াদের এই আন্দোলনকে সম্মান করতে পারেন। বিভেদ নয়, ঐক্য চাই। এটাই মতুয়া সম্প্রদায়ের কথা। আমরাও তাই বিশ্বাস করি। এই সম্প্রদায়ের মানুষকে আরও এগিয়ে আসতে হবে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই মতুয়া উন্নয়ন পরিষদ গঠন করেছে।’