গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বরাবরই জেরবার বিজেপি। সর সেটাই যেন বারবার প্রকট হয়ে সর্বসমক্ষে। গতকাল বাংলায় বিজেপির পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচির রূপরেখা ঠিক করার প্রথম বৈঠক ছিল। যেখানে প্রথম সারির অধিকাংশ নেতা থাকলেও ছিলেন না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গতকাল কলকাতায় বিজেপির হেস্টিংস কার্যালয়ে বৈঠক করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ, কেন্দ্রীয় সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন ও অমিত মালব্য, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্যের পাঁচ সাধারণ সম্পাদক, এক সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) এবং তিন সহ-সভাপতি, তখন সেখানে শুভেন্দু ছিলেন না। তিনি এ দিন হুগলির আরামবাগের খানাকুল এবং ঘাটালের দাসপুরে দলেরই অন্য কর্মসূচিতে ছিলেন।
শুভেন্দুর অনুপস্থিতি নিয়ে বিজেপি সূত্রের দাবি, এই বৈঠকে শুভেন্দুকে ডাকা হয়নি। কারণ, বৈঠকটা ছিল কেবল বাছাই করা সাংগঠনিক পদাধিকারীদের নিয়ে। শুভেন্দু বিরোধী দলনেতা হলেও দলীয় সংগঠনে তাঁর কোনও পদ এখনও নেই। তবে যতই এই যাবতীয় কথা বলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হোক না কেন, বিজেপি নেতৃত্বের এই ব্যাখ্যার পরেও তর্ক থামেনি। দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠছে, ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে বৈঠকে বিরোধী দলনেতা ডাক পাননিই বা কেন? শুভেন্দুর উত্থানে বিজেপির ‘আদি’ শিবিরের নেতারা অখুশি বলেই কি এমন হল?
রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘এ রকম কোনও বিষয় নেই। সব বৈঠকে সবাইকে ডাকা হয় না। সাংগঠনিক পদাধিকারীদের বৈঠক এবং পরিষদীয় বা সংসদীয় দলের বৈঠক আলাদাই হয়। কাল বা পরশু কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর বৈঠক হওয়ার কথা।’’ বিজেপি সূত্রের খবর, গতকালের বৈঠকে এক নেতা ‘আদি’ শিবিরের বদলে ‘নব্য’ শিবিরকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর মতে, প্রার্থী এবং আসন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ‘নব্য’রা বেশি প্রাধান্য পাওয়াতেই ভোটে দল হেরেছে। ওই বৈঠকেই আর এক নেতা বলেন, আসন ধরে ধরে ভোটের ফল বিশ্লেষণ করা দরকার। তা হলে দেখা যাবে, বিভিন্ন আসনে আলাদা আলাদা কারণে ভোটে হার হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যাঁদের অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই জিততে পারেননি।