২০০ আসনের স্বপ্ন দেখে কপালে জুটেছে সাকুল্যে ৭৭টি আসন। নিশীথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার বিধায়ক পদ ত্যাগ করায় তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭৫টি-তে। এদিকে কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায় দলবদল করলেও এখনও বিধায়ক পদ ত্যাগ করেননি। সবমিলিয়ে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে বেশ বড়সড়ই ভরাডুবি ঘটেছে বিজেপির। যার ফলে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে তীব্র হচ্ছে অন্তর্দ্বন্দ্ব। বাংলার ইস্যুকে কেন্দ্র করে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবও ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিজেপির অন্যতম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক তথা দলের রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র মন্তব্যেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বিষয়টি নিয়ে তুমুল জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। এদিন কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেছেন, “আমি ১৫ জুনের পর কলকাতা যেতে পারি। কিন্তু বাংলার বাকি দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা কী করবেন, আমি জানি না।” অর্থাৎ, এরমধ্যেই তাঁর বাংলায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। কৈলাস বিজয়বর্গীয়র এহেন মন্তব্যকে রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। মনে করা হচ্ছে, বাংলার ভোটে স্বপ্নভঙ্গের পর যেভাবে বঙ্গ বিজেপিতে দলীয় কোন্দল তীব্র হয়ে উঠেছে, তার আঁচ এসে পড়েছে কেন্দ্রের নেতাদের মধ্যেও।
বিজেপির অন্দরের খবর, বিধানসভা নির্বাচনে ফল প্রকাশের পর বঙ্গ বিজেপিতে বিদ্রোহের আঁচ বাড়ছে। আর সেই খবরেই কলকাতা ছুটছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। দলীয় সূত্রের খবর, কলকাতায় গিয়ে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করতে পারেন তিনি। এ ব্যাপারে গতকাল বিজেপির এই শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “যাবতীয় এজেন্ডা এখনই সংবাদমাধ্যমের সামনে বলার সময় আসেনি।” কৈলাস বিজয়বর্গীয়র এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেও রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি নির্বাচনী ফলাফল বিশ্লেষণের পাশাপাশি আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা রয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের ঝুলিতে? এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় ২০০টিরও বেশি আসন জয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিল বিজেপি। তার ধারেকাছে পৌঁছনো যায়নি। শুধু তাই নয়, ভোটে ভরাডুবির পর দলবদলুদের নিয়েও বিজেপির অস্বস্তি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ এবং অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে রাজ্য বিজেপির একটি বড় অংশের এবং ক্ষোভের আঁচ মূলত বাড়ছে দলের আদি কর্মীদের মধ্যে।