এবারে রাজ্যজুড়ে খাদ্যশস্যের অপচয় কমিয়ে সুষ্ঠু রেশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে খাদ্যসাথী (রেশন সরবরাহ) প্রকল্প ও ধান সংগ্রহ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। আরও স্থায়ী ক্রয় কেন্দ্র খুলে সরকারি উদ্যোগে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে চলতি খরিফ মরশুমের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রেশন ব্যবস্থা ও ধান কেনার উপর নজরদারি আরও বাড়াতে বলেছেন তিনি। তাঁর নির্দেশ, খাদ্যদপ্তরের ভিজিল্যান্স বিভাগের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনকেও দায়িত্ব নিতে হবে। রেশনে স্বচ্ছতা আনতে গ্রাহকদের আধার নম্বর সংযুক্তিকরণের কাজ দ্রুত শেষ করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনে বাইরের এজেন্সি নিয়োগ করতে চান। মুখ্যমন্ত্রী এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘এক দেশ এক রেশন’ কার্ড ব্যবস্থায় রাজ্য অংশ নেবে। তবে আধার যোগ করতে হবে। তাতে সময় লাগবে।
পাশাপাশি মমতা জানান, দুয়ারে রেশন চালু করার কাজ চলছে। প্রসঙ্গত,খাদ্যদপ্তর ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, জুলাইয়ের মধ্যে সব গ্রাহককে বাধ্যতামূলকভাবে আধার যোগ করতে হবে। জুন থেকে রেশন দোকানের ই-পস যন্ত্রে গ্রাহকের আঙুলের ছাপের মাধ্যমে আধার যাচাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগস্ট থেকে সবার ক্ষেত্রে বাধ্যাতামূলক হবে। বিপুল সরকারি ভর্তুকিতে সরবারহ করা খাদ্য অপচয় ও অনিয়ম আটকাতে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী নিয়েছেন। ভর্তুকির খাদ্য পাওয়ার রেশন কার্ড থাকা সত্ত্বেও যেসব গ্রাহক তা নেন না তাঁদের তালিকা সংগ্রহ করে রিপোর্ট তৈরি করা হবে। ওই গ্রাহকরা শুধু পরিচয়পত্র হিসেবে রেশন কার্ড নিয়েছেন বলেই সরকার জানিয়েছে। তাঁদের জন্য বিকল্প রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করা হতে পারে।
এছাড়াও রেশন গ্রাহকদের মধ্যে যাঁরা মৃত তাঁদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জোগাড় করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীদের এই কাজে লাগানো হবে। মৃতদের কার্ড বাতিল করতে আগেই সক্রিয় হয়েছিল খাদ্যদপ্তর। পঞ্চায়েত এলাকায় এব্যাপারে খামতি আছে। সেটা দূর করতে এবার বিশেষ উদ্যোগী হবে সরকার। এজেন্সির মাধ্যমে আধার সংযুক্তিকরণ সহ মুখ্যমন্ত্রীর বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশন। তবে ডিলারদের কমিশন বাড়ানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে সংগঠন। চাষীদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ বাড়ানোর জন্য আরও স্থায়ী ক্রয় কেন্দ্র খোলার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সমবায় সংস্থাগুলির উপর বিশেষ নজর রাখতে বলা হয়েছে। সমবায় সংস্থাগুলির বদলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের এই প্রক্রিয়ায় আরও বেশি করে যুক্ত করতে বলেছেন মমতা।