একুশের ভোটে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত করতে প্রায় ৫০০ জনের একটি দল দু’বছর ধরে বাংলার প্রতিটি কোনায় কোনায় গিয়ে কাজ করেছিল। বিজেপিকে রুখে দিয়ে রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য যে ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল, সেই জয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যারিশমার পাশাপাশি যে ‘দিদিকে বলো’, ‘বাংলার গর্ব মমতা’, ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’-এর মতো তাদের কর্মসূচীগুলি ব্যাপক ভাবে কাজে লেগেছিল তা এখন একবাক্যেই স্বীকার করে সকলে। এবার তৃণমূলের টার্গেট ২০২৪-এর লোকসভা ভোট। সেই কাঙ্খীত লক্ষ্য পূরণে ফের শাসক দলের হয়ে ময়দানে নামছে আইপ্যাক। ২০২৪ পর্যন্ত রাজনৈতিক পরামর্শদাতা এই সংস্থার সঙ্গেই চুক্তি করেছে রাজ্যের শাসকদল। দলনেত্রীকে সামনে রেখে আইপ্যাক-এর ছকে দেওয়া রণকৌশলেই দিল্লী দখলের উদ্দেশ্যে ঝাঁপাবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা, মুকুর রায়রা।
প্রসঙ্গত, উনিশের লোকসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না হওয়ায়, একুশের রণকৌশল তৈরিতে আইপ্যাক-এর সঙ্গে চুক্তি করেছিল তৃণমূল। সেই চুক্তি নিয়ে প্রথমে নানা প্রশ্ন উঠলেও, বিধানসভা ভোটের ফলাফলই বলে দিচ্ছে, সেদিনের সিদ্ধান্ত কতটা সঠিক ছিল। উনিশের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ১৮ আসন জয় করে কার্যত শাসক দলের কাঁধের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছিলেন দিলীপ ঘোষরা, ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকারের ধ্বজা উড়িয়ে মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারাও, তখনই আইপ্যাক-এর সঙ্গে চুক্তি করে তৃণমূল। শুরু হয় ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচী। সাধারণ মানুষের বিভিন্ন অভাব, অভিযোগের কথা সরাসরি পৌঁছে যায় দল ও প্রশাসনের শীর্ষস্তরে। এরপর কখনও ‘দুয়ারে সরকার’, কখনও ‘স্বাস্থ্যসাথী’। একের পর এক মাস্টারস্ট্রোকে কার্যত বাংলার মানুষের ঘরের মেয়ে হয়ে ওঠেন মমতা। যার ফল মেলে ভোটবাক্সে। এবার ‘মিশন ২০২৪’-এও যে তৃণমূলের হয়ে তেমনই অব্যর্থ রণকৌশল সাজাবে আইপ্যাক, তা বলাই বাহুল্য।