একুশের ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে শুরু হয়ে গিয়েছে দোষারোপের পালা। বারবারই সামনে আসছে নেতাদের নিজেদের কলহের কথা। এবার যেমন ফের প্রকাশ্যে এল বিজেপির অন্তর্কলহ। ভোটের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা নেতাদের ‘ট্রয়ের ঘোড়া’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন তথাগত রায়। কড়া ভাষায় তাঁর সেই মন্তব্যের সমালোচনা করলেন দলেরই সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। তাঁর মতে, ভোটের সময় আন্তরিক ভাবে দলের জন্য খেটেছেন যাঁরা, তাঁদের সকলকে ‘ট্রয়ের ঘোড়া’ বলে দাগিয়ে দেওয়া অন্যায়। বরং প্রবীণ এবং নবীন, সকলকে নিয়েই দলকে এগোতে হবে বলে বার্তা দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মুকুল রায়কে ইলিয়াড মহাকাব্যের ট্রয়ের ঘোড়ার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন তথাগত। টুইটে তিনি লিখেছিলেন, ‘স্পষ্টই মুকুল রায় ছিলেন ট্রোজান হর্স। বিজেপি তাঁকে স্বাগত জানানোর পরে তিনি দলের সর্বভারতীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুললেন। দলের অন্দরের সমস্ত কথা বিস্তারিত ভাবে জেনে তৃণমূলে ফিরে গেলেন।’ তথাগতর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সোমবার তাঁর নাম না করে স্বপনের টুইট, ‘বাংলায় ২০১৯-এর মে মাসের পর যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের সকলকে ট্রয়ের ঘোড়া হিসেবে দেখা অন্যায়। নবাগতদের অনেকেই অন্তরিক ভাবে ভোটে অংশ নিয়েছিলেন। কোনও পরিস্থিতিতেই তাঁদের অবাঞ্ছিত বোধ করানো উচিত নয়। রাজনীতি বাদ দেওয়ার খেলা নয়। খারাপ সময়ে পাশে থাকতে হয় এবং নতুন নেতা তৈরি করতে হয়।’
মুকুল চলে যাওয়ার পর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকের তৃণমূলে যাওয়া নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। তা নিয়ে তথাগতর বক্তব্য ছিল, ভোটের আগে বিজেপি-তে এসে দলের খুঁটিনাটি জেনে যে যার মতো ‘ঘরে’ ফিরে গিয়েছেন। তাঁদের স্বার্থপরতায় বিজেপিরই আদতে ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন তথাগত। আবার, মুকুল রায়ের তৃণমূলে যোগদানের পর বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছিলেন যে ক্ষমতালোভীদের রাখবে না দল। তবে দিলীপ-তথাগতদের একেবারে উল্টো সুরই শোনা গেল স্বপনের গলায়। তাঁর মতে, ‘যাঁরা একটি দলকে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির মাধ্যম হিসেবে দেখেন, তাঁদের জন্য বিকল্প দরজা সবসময় খোলাই থাকে।’