রাজ্যজুড়ে লোকাল ট্রেন চলার সম্ভাবনা এখন কম। তবে বিধিনিষেধে কিছুটা ছাড় দেওয়া হতে পারে পরিবহণক্ষেত্রে। সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা মাথায় রেখেই কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় চালু হতে পারে সরকারি বাস। ইতিমধ্যেই বাসের সমস্ত চালক, কন্ডাক্টর এবং অন্যান্য স্টাফেদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়ে গিয়েছে। যাতে গণপরিবহণে ডিউটি করতে গিয়ে কোনোভাবে তারা আক্রান্ত না হয়ে পড়েন। তবে পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা জানিয়েছেন, বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করে আদৌ কোনো বাস, ট্যাক্সি চলবে কিনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে তারা তৈরি। যেহেতু গত এক মাসে উল্লেখযোগ্যভাবে রাজ্যে করোনার গ্রাফ নিম্নমুখী সে কারণেই পরিবহণ ক্ষেত্রে কিছু ছাড় দেওয়া হতে পারে। কলকাতা এবং শহরতলির মধ্যে চালু করা হতে পারে সরকারি বাস। তবে এখনই দূরপাল্লার রুটে বাস চলবে না। সরকারি বাস চালানোর প্রস্তুতি শুরু হলেও বেসরকারি বাস মালিকরা অবশ্য জানাচ্ছেন, ভাড়া না বাড়লে বিধিনিষেধ উঠলেও তাদের পক্ষে বাস নামানো সম্ভব নয়। এদিকে মেট্রো কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, তারা সবদিক থেকে তৈরি। রাজ্য সরকার সম্মতি দিলেই মেট্রো পরিষেবা শুরু করে দেওয়া যাবে। শুধু বাসই নয়, এবার বিধিনিষেধে কিছুটা ছাড় দেওয়া হতে পারে প্রাইভেট গাড়ি, ট্যাক্সি, ক্যাব, অটো চলাচলেও। মফস্বলের মানুষদের শহরে আসার জন্য চালু হতে পারে শহরতলি থেকে ফেরি চলাচল।
সূত্র অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৮ হাজার সরকারি পরিবহণের সাথে যুক্ত কর্মী এবং প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ বেসরকারি বাস, ট্রাক, অটো, ট্যাক্সি, ক্যাব চালকদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয় গিয়েছে। বাকিদেরও চলছে। আরও প্রায় তিন লক্ষ বেসরকারি পরিবহণ কর্মীর বাকি আছে। অর্থাৎ করোনা সংক্রমণ রুখতে যাবতীয় সাবধানতা অবলম্বন করার প্রক্রিয়া চলছে। এমাসের ১৬ তারিখ থেকে খোলার কথা রেস্তোরাঁ, শপিং মল। মনে করা হচ্ছে ওইদিন থেকে পরিবহণ ক্ষেত্রে কিছু কিছু ছাড় মিলতে পারে। পরিবহণ দপ্তরের কর্তারাও জানাচ্ছেন, তারা প্রস্তুত পরিষেবার জন্য। শুধু শহরের মধ্যেই নয় চুঁচুড়া, ব্যান্ডেল, নৈহাটি, হাবড়া, ব্যারাকপুর, বারাসতের থেকেও যাতে ট্রেনের বদলে যাত্রীরা বাসে চড়ে শহরে আসতে পারেন সেকারনে ওইসব রুটে বাস চালানোরও ভাবনা রয়েছে। একইসঙ্গে জেলা থেকে শহরের রুটে চালানো হতে পারে ফেরিও। যদিও চলবে না বেসরকারি বাস। অন্তত তেমনটাই জানাচ্ছেন বাস মালিকরা। তাদের দাবি, যেভাবে ডিজেলের দাম বাড়ছে তাতে ভাড়া না বাড়ালে বাস রাস্তায় নামানো সম্ভব না। তাছাড়াও গাড়ির ট্যাক্স থেকে ইএমআই একাধিক বিষয়ে ছাড় দিতে হবে। অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারন সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “আমরা জোর করে কাউকে বাস নামাতে বলব না। কেউ চাইলে নামাবে, না চাইলে নামাবে না।” ওয়েস্টবেঙ্গল বাস মিনিবাস অনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ নারায়ন বোস বলেন, “ভাড়া না বাড়ালে বিধিনিষেধ উঠলেও কেউ গাড়ি নামাতে রাজি নন। তেলের দাম যা বাড়ছে তাতে পুরনো ভাড়ায় বাস চালানো সম্ভব নয়।”