ফের একবার স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে সরব হয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। আর তা নিয়েই এবার কলকাতার প্রাক্তন মেয়র পালটা দিলেন বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক। ফেসবুক লাইভে অধ্যাপিকা-বন্ধু বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একের পর এক অভিযোগ করেছিলেন শোভন। তারই পালটা জবাব দিয়েছেন রত্নাদেবী।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ মে নারদ মামলায় শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই। খবর পেয়ে সেদিনই নিজাম প্যালেসে ছুটে যান স্ত্রী রত্না। কিন্তু রত্নার সেই ভূমিকা যে তিনি ভাল চোখে দেখেননি, তা আগেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন শোভন। এবার ফেসবুক লাইভে অধ্যাপিকা-বন্ধু বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে বিরক্তিও প্রকাশ করেছেন তিনি।
কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের দাবি, ‘নিজাম প্যালেসে রত্না যখন আমার সঙ্গে কথা বলতে আসে, তখন রত্নাকে আমি চলে যেতে বলেছিলাম। লোক পাঠিয়ে সিবিআইকে বলেছিলাম, আপনাকে সরাসরি বলতে সেখান থেকে চলে যেতে। রত্না আমাকে আইনত সাহায্য করেছে – এরকম কোনও প্রশ্নই ওঠে না। গ্রেফতারির শুরু থেকে জামিন পাওয়া পর্যন্ত, সবসময় বৈশাখীই সঙ্গে ছিল।’
রত্নাকে বিয়ে করা তাঁর চরম ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলে ফেসবুক লাইভে দাবি করেন শোভন। বলেন, ‘তুমি আমার সঙ্গে ছিলে গত চার বছর। আমি সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। তার আগের ২২ বছরের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। রত্নাকে স্ত্রী হিসেবে বিশ্বাস করে ভুল করেছিলাম। রত্না অন্য যুবকের সঙ্গে জীবনযাত্রা বেঁধে নিয়েছে।’ স্বামীর এ হেন বক্তব্য শুনে পালটা দিতে কসুর করেননি রত্না চট্টোপাধ্যায়ও।
বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘শোভন মিথ্যেবাদী, নোংরা। সিবিআই কিছু বলেনি। মানবিকতা বোধ ছিল বলেই গিয়েছিলাম। শোভন পাগল। বৈশাখী এমন কিছু খাওয়ায়, তাতে পাগল হয়ে গেছে, স্লো পয়জন করা হচ্ছে।’ তাঁর আরও দাবি, ‘কে ব্যাভিচারী মানুষ সবাই জানে। আমি পরপুরুষকে ঘরে ঢোকাইনি, আমি কলঙ্কিত হলে ভোটে জিততাম না।’
বৈশাখী-রত্নার মধ্যে ‘শীতল যুদ্ধ’ নিয়ে প্রাক্তন মেয়রের কটাক্ষ, ‘রত্না চট্টোপাধ্যায় কেন বৈশাখীর ভূত দেখেন, উনিই বলতে পারবেন!’ জবাবে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘কেন ফোবিয়ায় ভুগব না? এই মহিলা শুধু আমার নয়, অনেক মহিলারই ঘর ভেঙেছে।’
রত্না চট্টোপাধ্যায় উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপনে অভ্যস্ত বলেও অভিযোগ করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। বলেন, ‘আমি যে বাড়িতে থাকতাম, সেই বাড়িতে এখন নেশার আসর বসে। ২৭ জানুয়ারি দীঘার হোটেলের কিছু উদ্দাম নাচের ভিডিও রয়েছে।’ রত্নার পালটা জবাব, ‘ছবিতে নেশার জিনিস থাকলে দেখান উনি, নাটক করে লাভ নেই। দীঘার হোটেলে উদ্দাম নাচের ছবির প্রমাণ থাকলে, দেখাক।’
রত্নাকে ফেসবুক লাইভে আক্রমণ করেছেন বৈশাখীও। তাঁর কথায়, ‘রত্না চট্টোপাধ্যায় আমাকে ইনসিকিওর প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন। আমার সবচেয়ে বড় সিকিউরিটি শোভন চট্টোপাধ্যায়। শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ভালবাসা, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্নেহ যতদিন সঙ্গে আছে, ততদিন তার ইনসিকিওর হওয়ার কোনও কারণ নেই।’ এ নিয়ে রত্নার কটাক্ষ, ‘দু’জন কলঙ্কিত নায়ক-নায়িকা। ছাত্র-যুব সমাজকে কী শেখাচ্ছেন? তাঁরা যেন শিক্ষা দিতে না আসে।’