বিগত কয়েকমাস যাবৎ গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে তাঁদের দুজনের। তবে আজ সকাল থেকেই শোনা যাচ্ছিল, আজ তৃণমূল ভবনে গিয়ে যোগ দিতে পারেন তিনি। আর তারপরই বিকেলে সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে পুরনো দল তৃণমূলে ফিরলেন কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক করহ সর্বভারতীয় বিজেপির সহ সভাপতি মুকুল রায় ও তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু রায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর তৃণমূলে যোগ দেন মুকুল। তিনি জানান, পুরোনো জায়গায় ফিরতে পেরে খুশি। মুকুলের প্রশংসা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
গত বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই মুকুল রায়কে কোণঠাসা করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ মুকুল শিবিরের। সাধারণত সংগঠনের কাজ দেখতে পছন্দ করেন। কিন্তু চলতি বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর উত্তরের প্রার্থী করে পাঠানো হয়েছিল মুকুলকে। ফলে গোটা বিধানসভা পর্বেই দেখা যায়নি মুকুলকে। যদিও কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে জিতেছেন তিনি। কিন্তু তারপর থেকেই কার্যত সক্রিয় ভূমিকায় বেপাত্তা ছিলেন মুকুল। ফলে তাঁকে ঘিরে প্রবল জল্পনা শুরু হয়। আর আজ সেই জল্পনারই অবসান ঘটলো।
মুকুল রায় কেন বিজেপি ছাড়লেন, কেন তৃণমূলে যোগ দিলেন, সাংবাদিক বৈঠকে এসব প্রশ্ন করতে বারণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “তৃণমূল সবার দল। মুকুলকে আমরা গ্রহণ করেছি। সেটাই ফাইনাল। এই নিয়ে আর কোনও প্রশ্নের উত্তর দেব না।” এর পাশাপাশি মমতা বলেছেন, “যারা ভোটের সময় গদ্দারি করেছে, তাদের কোনওভাবেই তৃণমূলে ফেরানো হবে না। মুকুল ভোটের সময় তৃণমূল নিয়ে কোনও কথা বলেনি। কিন্তু, যারা গদ্দারি করেছে তাদের কোনওভাবেই দলে নেওয়া হবে না।” তৃণমূলে ফিরে এসে খুশি মুকুল রায় নিজেও। একইসঙ্গে তিনি জানান, “বিজেপি-তে কেউ থাকবে না। সবাই তৃণমূলে ফিরে আসবে।”
এদিন মুকুল রায় বললেন, “আমার ভালো লাগছে পুরোনো দলে ফিরে। বাংলা নিজের জায়গায় ফিরবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। পুরোনো ঘরে এসে আমার খুব ভালো লাগছে। পুরোনো সবার সঙ্গে দেখা হয়ে ভীষণ আনন্দ হচ্ছে। পাশাপাশি নতুন আঙিনায় নতুন ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।” এরপর সাংবাদিক বৈঠকেই মমতা বলেন, “মুকুল তৃণমূলে আসার ফলে মানসিক শান্তি পেল। ওকে বিভিন্ন এজেন্সির ভয় দেখিয়ে বিজেপি নিয়ে গিয়েছিল। তবে আমরা শক্তিশালী আছি। মুকুল ঘরের ছেলে ঘরে ফিরল, এটা ভালো কথা।”