যাত্রা হল বাংলার বহু পুরনো এবং ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলা। ক্ষমতায় এসেই বাম জমানায় প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এই শিল্পকে আবারও পুনরুজ্জীবিত করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুরু করেন যাত্রা উৎসবও।
এর পাশাপাশি, এ বছর দুর্গাষষ্ঠী থেকে রাজ্যে শুরু হয়ে আরও এক যাত্রার আসর। পুজোকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জেলায় সাড়া ফেলে দিয়েছে চিৎপুরের একাধিক অপেরার যাত্রা। সেই ধারা অক্ষুণ্ণ রইল কালীপুজোতেও। স্বভাবতই খুশি চিৎপুর যাত্রাপাড়া।
যাত্রাপাড়া সূত্রের খবর, এ বছর বিভিন্ন জেলার বহু নামী কালীপুজো গত শনিবারই উদ্বোধন হয়ে গিয়েছিল। ফলে সেসব জায়গায় না না অনুষ্ঠানের সঙ্গে মঞ্চস্থ হয় বিভিন্ন সামাজিক ও পৌরাণিক যাত্রাপালাও। এতে গত এক সপ্তাহ ধরে চুটিয়ে অভিনয় করেছেন যাত্রাপালার কলাকুশলীরা।
অপেরা মালিকদের একাংশের বক্তব্য, যাত্রার মাধ্যমে আবারও আগের মতো দু’পয়সা রোজগার হওয়ায় আমরা খুশি। এভাবেই যাত্রাশিল্পের উন্নতি হতে থাকলে, বাংলার এই শিল্পকলা আরও দীর্ঘায়ু হবে। পাশাপাশি, যাত্রার সঙ্গে যুক্ত অজস্র মানুষ দুটো পয়সারও মুখ দেখতে পারবে। যাত্রা শিল্পীরা জানালেন, ঘর-বাড়ি ছেড়ে যাত্রার জন্য আমরা জেলায় জেলায় ঘুরে বেড়াই। সেখানে যখন মানুষ দলে দলে যাত্রা দেখতে আসেন, তখন সত্যিই আমাদের আনন্দ হয়।
চিৎপুরের যাত্রাপাড়ার সকলেই এক বাক্যে স্বীকার করেন, বাম আমলে এই শিল্পে ভাটা পড়েছিল। যাত্রাপাড়ার ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু রাজ্যে পালাবদলের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে নতুন জীবন পায় এই গোটা যাত্রাপাড়া। আবারও ধীরে ধীরে উন্নতি হতে থাকে যাত্রাশিল্পের। এমনকি, ইদানীং যাত্রা শিল্পীরা নানারকম সরকারি সাহায্যও পান।
অপেরা কর্তৃপক্ষ জানান, দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই এসে গিয়েছে জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্য বুকিং। দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, মেদিনীপুর প্রভৃতি জেলাগুলি থেকে ইতিমধ্যেই প্রচুর বুকিং এসেছে। এর মধ্যে হাতে যে ক’দিন সময়, তার মধ্যে চলবে পুরনো পাঠগুলি ঝালিয়ে নেওয়ার কাজ। বিভিন্ন জায়গায় বাগানবাড়ি বা দালানবাড়ি ভাড়া নিয়ে জোরকদমে চলছে মহড়া।