যশের দাপটে কার্যত বিপর্যস্ত বাংলার একাংশ। সুন্দরবন, পাথরপ্রতিমা সহ দক্ষিণ ২৪ পরগণার একাধিক জায়গাতে ঘূর্ণিঝড়ের ঝাপটায় ভেঙে গিয়েছে বাঁধ। ভেসে গিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। চারপাশ জুড়ে ভয়ঙ্কর ছবি। এই অবস্থায় ফের আসতে চলেছে বান। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেদিকে তাকিয়েই প্রশাসনকে আগাম প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। শুরু হয়ে গিয়েছে তোড়জোড়। ১১ তারিখ আসছে বান, যা আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা। তাই রাজ্য প্রশাসনকে আগাম প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অনুমান করা হচ্ছে, বানে আরও ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাস হবে। জানা যাচ্ছে, আগামী ১১ই জুন গঙ্গায় আসতে চলেছে ভরা কোটালের বান। আর এই বান আসার কারণে গঙ্গার জলস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে শহর কলকাতার নীচু এলাকাগুলি জলমগ্ন হতে পারে। পাশাপাশি যদি শহর কলকাতা জুড়ে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হয় এই সময়ে তাহলে জলমগ্ন পরিস্থিতি আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা। ইতিমধ্যে আগামী ৪৮ ঘন্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আর এরপরেই পুরসভার তরফে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বানের জলে নিচু এলাকাগুলিতে জল ঢুকে পড়তে পারে। আর ওই সময় যদি বৃষ্টি শুরু হয় তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা। আর সেদিকে তাকিয়েই বাড়তি সতর্কতা পুরসভার তরফে। ইতিমধ্যে কলকাতা পুরসভার সবকটি পাম্প হাউসে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। শহর কলকাতার যে সমস্ত নীচু এলাকা রয়েছে, সেখানে ২০০ টিরও বেশি ভ্রাম্যমান হাই পাওয়ার পামসেট বসিয়ে জমা জল দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি জলমগ্ন অবস্থার সৃষ্টি হলে যাতে ওই সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষজনকে দ্রুত নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সেই ব্যাপারে পুর আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন স্কুলগুলিকে তৈরি রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে জলবন্দি মানুষকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে খাওয়া-দাওয়ারও ব্যবস্থা থাকছে।
উল্লেখ্য, দুলকি, সোনাগাঁ, রাঙাবেলিয়া, আরামপুর, পাখিরালয়, কচুখালি, কুমিরমারি।ইত্যাদি একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা আতঙ্কের প্রহর গুনছেন। তাঁদের অভিযোগ, এখনও বহু জায়গায় নদীবাঁধ মেরামতি শেষ হয়নি। আবার বাঁধ ছাপিয়ে জল ঢুকে সর্বস্ব খোয়ানোর আশঙ্কা করছেন দুর্গতরা। নদী আর সাগরের তীব্র জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে তছনছ হয়ে গিয়েছে সুন্দরবনের বহু এলাকার মাটির নদীবাঁধ। বিধ্বস্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। বাঁধ ছাপিয়ে নদীর নোনা জল ঢুকে এখনও প্লাবিত বহু এলাকা। এর মধ্যে ফের জল ঢোকা শুরু হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা। কাজেই বাড়তি তৎপর রাজ্য সরকার।