আগামী ২২ নভেম্বর দিল্লীর অন্ধ্রভবনে বিজেপি বিরোধী দলগুলির শীর্ষ নেতা-নেত্রীরা বৈঠকে বসছেন। আর সেই বৈঠকে মধ্যমণি হচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী তেলেগু দেশম পার্টির প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বৈঠকে মমতার উপস্থিত রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
তবে শুধুমাত্র বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছেন না চন্দ্রবাবু। মমতার সঙ্গে এই নিয়ে আলচনা সারতে আগামী ১৯ নভেম্বর নিজে কলকাতা উড়ে আসছেন। জানা গেছে, আগামী সোমবার নবান্নে দেশের এই প্রধান দুই বিরোধী দলের সুপ্রিমোর বৈঠক হবে।
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, আগামী লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে মমতাকে সামনে রেখে বিরোধীদের ফেডারেল ফ্রন্ট গড়ার যে প্রয়াস শুরু হয়েছে, দিল্লির ওই বৈঠক তারই প্রথম বড়সড় উদ্যোগ। ‘গণতন্ত্র বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’ শীর্ষক ভাবনা সামনে রেখে এই বৈঠকের আয়োজন করা হচ্ছে। সেখানে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী, বিএসপি প্রধান মায়াবতী, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, আরজেডি’র তেজস্বী যাদব, এমনকী ওড়িষ্যারর মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের মতো বিরোধী নেতা-নেত্রীরা যাতে উপস্থিত থাকেন, তার জন্য সবপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন চন্দ্রবাবু নায়ডু।
বিজেপিকে হারাতে মমতা প্রথম থেকেই ফেডারেল ফ্রন্টের ডাক দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘প্রতিটি রাজ্যে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী হলে বিজেপিকে হারানো সম্ভব’। কর্নাটকের নির্বাচনী ফলাফলই তার বড় প্রমান। এসবের সঙ্গে নোটবন্দী, জিএসটি, সিবিআই ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জী নিয়ে কোণঠাসা হয়ে আছে বিজেপি। তাই গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার এটাই সেরা সময়। মমতাও তাই বেছে নিয়েছেন এই সময়টাকেই। সেই জন্য ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেডের ডাক দিয়েছেন তিনি। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইতে নেত্রী খোলামনে সবার সঙ্গে আলোচনা চালাতে প্রস্তুত। তারই অঙ্গ হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়া সত্ত্বেও বাম শরিক আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লককে ব্রিগেডের সভায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মমতা। আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সিপিএম শাসিত কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকেও।
এদিকে, শহরের গঙ্গাতীরবর্তী দুটি এলাকা হেস্টিংস ঘাট ও দইঘাটে ছটপুজোর আয়োজনে অংশ নিয়ে ফের গেরুয়া শিবিরের বিভেদ আর বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন মমতা। দুটি অনুষ্ঠানেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গী ছিলেন মন্ত্রিসভার সহকর্মী ফিরহাদ হাকিম এবং দক্ষিণ কলকাতার সংসদ সদস্য সুব্রত বক্সী। দইঘাটে পুজো দেন মমতা। তিনি বলেন, ‘সব ভাষা, ধর্ম আর বর্ণ মিলিয়েই এই দেশ। সেটাই চিরাচরিত পরম্পরা। দেশের সেই পরম্পরা আর ঐতিহ্য মেনে চলে এই বাংলা। এখানে আমরা সব ভাষা আর ধর্মের মানুষ মিলে একটা পরিবার’।