কোনও ভাবেই মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা বাতিল হবে না। অতিমারি পরিস্থিতি কেটে গেলেই দুই পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষার দিনক্ষণ সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিক বৈঠক করে আগেই এ কথা জানিয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেই মতোই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার দিন ঘোষণা করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, অগাস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মাধ্যমিক পরীক্ষা। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে।
তবে আদৌ কি এই বছর পরীক্ষা হবে? বিকল্প পদ্ধতিতে যদি পরীক্ষা হয়, তাহলে সেটা কীভাবে সম্ভব? মূল্যায়নই বা হবে কোন পদ্ধতিতে? আজ রিপোর্ট জমা করবে বিশেষ কমিটি। গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর এই রিপোর্ট জমা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা গিয়েছে, মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা যাতে হয়, সে ব্যাপারেই সুপারিশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেক্ষেত্রে ওপেন বুক সিস্টেমে পরীক্ষা হতে পারে। অনলাইনে এমসিকিউ টাইপ প্রশ্নে পরীক্ষা হতে পারে। এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ লক্ষ। তাদেরকে এক জায়গায় এনে পরীক্ষা নেওয়াটাই বিশেষজ্ঞদের কাছে চ্যালেঞ্জ। এ প্রসঙ্গে শিক্ষাবীদ সৌগত বসু বলেন, ‘পরীক্ষা হওয়াটা সবসময়ই কাঙ্খিত। আমাদের রাজ্যের যা পরিস্থিতি, তার সঙ্গে দেশের অনান্য বোর্ডের পরিস্থিতিটা একটু আলাদা। করোনার প্রথম পর্যায়ে বিভিন্ন বোর্ড তাদের নিয়মিত ইন্টারন্যাল ইভ্যালুয়েশনগুলি করতে পেরেছিল। সেক্ষেত্রে আমাদের রাজ্যে পরীক্ষা না হলে মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের রেজাল্ট তৈরি করাটা কঠিন হয়ে পড়বে। যে রেজাল্ট তৈরি করা হবে, তা গুণমানের সঙ্গে সাদৃশ্য রাখবে না।’
যদিও তিনি এ-ও বলেন, ‘তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বাংলার যা পরিস্থিতি তাতে স্কুলে এনে পরীক্ষা নেওয়াটা চাপের। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণও পরীক্ষা না নেওয়ার পক্ষেই যেতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে অনলাইন পরীক্ষা একটা ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’ তাঁর আরও পর্যবেক্ষণ, ‘সাধারণত অনলাইন পরীক্ষার ক্ষেত্রে দেখা যায় ছাত্রছাত্রীরা তাদের নোট কিংবা বইয়ের সাহায্য নিচ্ছে। আমাদের মধ্যশিক্ষা পর্ষদের যে পাঠক্রম রয়েছে, সেখানে ওপেন বুক ইভ্যালুয়েশনের ইন্টারন্যাল ফরম্যাট রয়েছে। এর মাধ্যমে অন্তত ছাত্রছাত্রীদের পারফরমেন্সের প্রতিফলন থাকবে রেজাল্টে।’ উল্লেখ্য, মাধ্যমিকে এবার পরীক্ষার্থী প্রায় ১২ লক্ষ। উচ্চ মাধ্যমিকে সংখ্যাটা প্রায় সাড়ে আট লক্ষ। এই ২০ লক্ষ পরীক্ষার্থী এখন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের দিকে তাকিয়ে।