বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই গেরুয়া শিবিরে শুরু হয়ে গিয়েছে দোষারোপের পালা। বারবারই সামনে এসে পড়ছে পদ্মবনের অন্তর্কলহ। এবার যেমন পদে থেকেও সংখ্যালঘুদের জন্য কোনও কাজ করতে না পারার অভিযোগে প্রকাশ্যেই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন বিজেপির সংখ্যালঘু নেতারা। তবে শুধু ক্ষোভপ্রকাশেই থেমে থাকলেন না তাঁরা। পরিবর্তে নিলেন দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত। পদ্ম শিবিরে লাগল ভাঙন। ইস্তফা দিলেন বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার সহ সভাপতি কাশেম আলি। ইতিমধ্যেই ইস্তফাপত্র বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ কবিরুল ইসলামও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দু’জনেই তৃণমূলে যোগদানের ইচ্ছাপ্রকাশ করে কুণাল ঘোষের দ্বারস্থও হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে পদ্ম শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন কাশেম আলি। আর তারপরই তাঁকে সংখ্যালঘু মোর্চার সহ সভাপতি পদ দেওয়া হয় বিজেপির তরফে। তবে তা সত্ত্বেও তৃণমূলে কেন ফিরতে চাইছেন কাশেম? তাঁর মতে, ‘বিজেপিতে থেকে আর যাই হোক সংখ্যালঘুদের জন্য কোনও কাজ করা সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে এই সিদ্ধান্ত।’ তিনি একা নন, আরও অনেকেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন বলেও দাবি কাশেমের। শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ কবিরুলের বক্তব্যও প্রায় একইরকম। তাঁর দাবি, বিজেপিতে রয়েছেন ঠিকই। তবে দলের তরফে তাঁকে সেভাবে কাজে লাগানো হয়নি।
এছাড়া নারদ মামলায় ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্রের গ্রেফতারিরও তীব্র বিরোধিতা করেছেন কবিরুল। নারদ কাণ্ডে জড়িত বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এইসব কারণে ‘বীতশ্রদ্ধ’ হয়েই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত কবিরুলের। শোনা যাচ্ছে, গত ডিসেম্বরে বিজেপিতে যোগ দেওয়া পুরশুড়ার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক পারভেজ কাশেমও নাকি ফের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা ভাবছেন। কাশেম, কবিরুল কিংবা পারভেজ ছাড়াও বিজেপিতে থাকা বহু সংখ্যালঘু নেতা-কর্মী দলবদল করতে পারেন বলেই খবর। তার ফলে বিজেপি শিবিরে বেশ বড়সড় ভাঙন ধরতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। তবে বিজেপি ছেড়ে যাঁরা তৃণমূলে আসার ইচ্ছাপ্রকাশ করছেন, তাঁদের নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলেই দাবি কুণাল ঘোষের।