গতকালই রাজ্যের উপকূল ছুঁয়ে বেরিয়ে গিয়েছে ঘূর্ণিঝড় যশ। কিন্তু সাইক্লোন পরবর্তী বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা। বানভাসি এলাকা থেকে মানুষ-জনকে উদ্ধার করা গেলেও ডুবে গিয়েছে ঘর-বাড়ি থেকে মাইলের পর মাইল চাষের জমি। একই অবস্থা হাওড়া জেলাতেও। রূপনারায়ণের জলে প্লাবিত হয়েছে বাগনানের দেউলটির পানিত্রাস সংলগ্ন এলাকা। সেখানে বিঘের পর বিঘে চাষের জমি বর্তমানে জলের তলায়। আর এখানেই রয়েছে অমর কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি। একে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব, তার ওপর পূর্ণিমা। নদীতে জোয়ার আসার পর থেকেই এলাকা ডুবতে শুরু করে। ডুবে যায় শরৎচন্দ্রের বাড়িও। সেই বাড়ি যেখানে রচিত হয়েছে, শ্রীকান্ত, পরিণীতা, রামের সুমতির মত তাঁর কালজয়ী সব সৃষ্টি।
আজ সকালে শরৎচন্দ্রের বাড়ি গিয়ে দেখা যায় বাড়ির ভেতরে উঠোনে এক কোমর জল। বাড়িটি দেখাশোনা করার জন্য একজন কেয়ারটেকার সর্বদা থাকেন। সেই ব্যক্তি জানান, শেষ ৭৮ এর বন্যার পরে এতটা জল দেখা যায়নি এই এলাকায়। ১৯৭৮ সালের ভয়াবহ বন্যার পর আবারও এভাবে জলমগ্ন হল শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি। উল্লেখ্য, দেউলটির এই বাড়িতেই তাঁর জীবনের বহু কালজয়ী গল্প, উপন্যাস রচনা করেছেন কথাশিল্পী। কলকাতা থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে রূপনারায়ণের তীরে ছবির মতো সাজানো এই গ্রামে প্রায়ই ভ্রমণ পিপাসুদের ভিড় চোখে পরে। তবে স্থানীয় মানুষদের কথায় বহু বছর পর ফের গ্রাম ভাসাল রূপনারায়ণ।
এলাকার গোবিন্দপুর গ্রামে পাকা রাস্তা ভেঙে জল ঢুকছে গ্রামের মধ্যে। এলাকার মানুষ ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে রয়েছেন। এলাকার এক পঞ্চায়েত সদস্যের আশঙ্কা, “এইভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে হয়ত গোটা গোবিন্দপুর গ্রামটিই জলের তলায় চলে যেতে পারে। কমপক্ষে হাজারটির উপর বসতবাড়ি রয়েছে রূপনারায়ণের তীরে অবস্থিত ছোট্ট এই গ্রামে। প্রসঙ্গত, ‘যশ’ মোকাবিলায় প্রস্তুত ছিল প্রশাসন। তবে ঝড়ের তাণ্ডব দেখা না গেলেও হুগলি ও রূপনারায়ণে প্রবল জলোচ্ছ্বাসের কারণে প্রাবিত হয়েছে শ্যামপুর ১ এবং ২ ব্লকের ১৫টি পঞ্চায়েতের অন্তত ৬০টি গ্রাম। প্রশাসনের প্রাথমিক রিপোর্ট, দুই ব্লকের লক্ষাধিক মানুষ দুর্যোগের কবলে পড়েছেন।