আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মতো বুধবার সকালেই উড়িষ্যার বালাসোরে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’। তারপর ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শেষ করে সময় যত এগিয়েছে, দেখা গিয়েছে ঝড়ের ধাক্কা অধিকাংশটাই গিয়ে লেগেছে উড়িষ্যায়। কিন্তু বাংলায় সংকট বাড়িয়েছে জলোছ্বাস। ঢেউয়ের তোড় লন্ডভন্ড করে দিয়েছে দীঘা, মন্দারমণির মতো অঞ্চল। সমুদ্রের নোনাজল ঢুকে কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কলকাতায় যশের প্রভাব তেমন পড়েনি ঠিকই, কিন্তু ঝড় নিয়ে এখনই নিশ্চিন্ত হওয়ার কারণ নেই, এদিন আরও একবার সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার দুপুরে নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজ ও কাল খুব সাবধানে থাকতে হবে। ভরা কোটালের মাঝেই সাইক্লোন চলছে বলে এই বাড়তি সতর্কতা। আজ রাতে এবং আগামীকাল সকালে বান আসার সম্ভাবনাও রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, ‘জল এমনিতেই বেড়েছে। তার ওপর যদি আরও ৫ মিটার বাড়ে তবে সেটা সাংঘাতিক হবে।’ অবশ্য ভয় না পেয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করার ওপর জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘যাঁরা নদী বা সমুদ্রের পাশে থাকেন তাঁরা সতর্ক হোন।’ আজ রাতে ৮.৪৫ নাগাদ বান আসার কথা। তাই আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কলকাতা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মমতা জানিয়েছেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দুই চব্বিশ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং হাওড়ার কয়েকটি ব্লকে। মূলত নদী ও সমুদ্রের জল ঢুকেই বিপত্তি ঘটেছে। উত্তর চব্বিশ পরগনার সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ, হাড়োয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর, কাকদ্বীপ, নামখানা, কুলতলি, পাথরপ্রতিমা, রায়দিঘির মতো এলাকার অবস্থা সাংঘাতিক। সমুদ্রের জল ঢুকে ভেসে গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির দুটি ব্লক, রামনগরের দুটি ব্লক, নন্দীগ্রাম এক ও দু’নম্বর ব্লক, সুতাহাটা, হলদিয়ায় নোনাজল ঢুকে গিয়েছে। তাছাড়া হাওড়ার শ্যামপুর, উদয়নারায়ণপুর, সাঁকরাইলের বিস্তীর্ণ এলাকাও প্লাবিত বলে জানিয়েছেন তিনি।