আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মতো বুধবার সকালেই উড়িষ্যার বালাসোরে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’। সকাল ৯টা নাগাদ শুরু হয়েছে তার ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া। মৌসম ভবন জানিয়েছে, ৩ ঘণ্টা ধরে চলবে এই প্রক্রিয়া। এর প্রভাবে তোলপাড় করা ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে উড়িষ্যার একাধিক এলাকায়। পাশাপাশি বাংলায় সবচেয়ে বেশি বিপর্যয় প্রত্যক্ষ করছে দীঘা-মন্দারমণি এলাকা।
বুধবার সাতসকাল থেকেই প্রবল জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়ে যায় দীঘায়। রুদ্ররূপ ধারণ করে সমুদ্র। গার্ডরেল উপচে জল চলে আসে ডাঙায়। বেলা গড়াতেই রাস্তা পর্যন্ত চলে আসে জল। প্রায় কোমর-সমান জলে ভেসে যায় বহু গাড়িও। আতঙ্কে বাড়ি ছাড়ছেন অনেক বাসিন্দা।
একটি ভিডিওয় দেখা গেছে, মন্দারমণিতে একটি হোটেলের কর্মচারী ইটের থাক তৈরি করে জল আটকানোর চেষ্টা করছেন। হাওয়ার শব্দে আর গতিতে স্থির থাকা দায়। সমানে তাণ্ডব চালাচ্ছে সমুদ্র। এক একটি ঢেউয়ের উচ্চতা ৩০ ফুটেরও বেশি। গোটা পূর্ব মেদিনীপুরেই কার্যত বন্যা পরিস্থিতি। জল ঢুকতে শুরু করেছে কাঁথিতে। স্থলভাগের যত কাছে আসছে ততই শক্তি বাড়াচ্ছে সাইক্লোন ইয়াস।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসককে নবান্ন থেকে বিশেষ ভাবে সতর্ক করা হয়েছে। গোটা এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধেতেই নামানো হয়েছে সেনা। মানুষ ও গবাদি পশু বাঁচানোর প্রবল চেষ্টা করছে তারা। এদিকে, হলদি নদীতেও প্রবল জলোচ্ছ্বাস ঘটেছে যশের দাপটে। জল ঢুকতে শুরু করেছে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে। বাঁধ ভেঙে নদী-তীরবর্তী এলাকায় জল ঢোকার আশঙ্কা বাড়ছে সেখানেও। দোকান বেঁধে রাখছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাত থেকেই দীঘায় শুরু হয়েছিল প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া। সেইসঙ্গে সমুদ্রে ঢেউয়ের উচ্চতাও বাড়ছিল। সময় যত এগিয়েছে, পরিস্থিতি তত সঙ্গীন হয়েছে। ইতিমধ্যেই দীঘার বাজার এলাকা ৫ থেকে ৬ ফুট জলের তলায় চলে গিয়েছে। জল ঢুকেছে মন্দারমণি, শঙ্করপুর, তাজপুর এলাকায়। প্রচুর গ্রাম জলের তলায়। তবে দীঘায় উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের অনেক আগেই নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে প্রশাসন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নামানো হয়েছে সেনা।