বাংলা ও উড়িষ্যার সীমানা লাগোয়া উপকূলেই আছড়ে পড়বে যশ। সেই তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতি কতটা হবে, সেই বিপদেরই প্রহর গুনছে উপকূল এলাকার মানুষ। এই সময় সরকার-প্রশাসন পাশে দাঁড়ালে একটা আলাদা শক্তির সঞ্চার হয়। কিন্তু বাংলা লাগোয়া উড়িষ্যার তালসারির উদয়পুরের মানুষের অভিযোগ, তাঁদের সরকার রাজনীতির বেড়াজালে সীমাবদ্ধ। কিছুই ব্যবস্থা করেনি তাঁদের জন্য। উল্টে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা শোনা গেল উদয়পুরের মানুষের মুখে।
যতবার প্রাকৃতিক বিপর্যয় এসেছে, তছনছ করেছে উপকূলের এই মানুষগুলোর সম্বলকে। তবু তাঁরা ঘুরে দাঁড়ান, আবারও নতুন করে গড়েন। আবারও নতুন কোনও বিপর্যয় এসে তা উড়িয়ে নিয়ে যায়। যশও তার তাণ্ডবলীলার বেশির ভাগটাই উপকূলে চালাবে। এই সময় উপকূলের মানুষের একটা নিরাপদ আশ্রয় দরকার, দু’বেলা খাওয়ার জন্য ন্যূনতম কিছু ব্যবস্থা দরকার। বাংলা-উড়িষ্যা সীমানায় যশ মোকাবিলায় দেখা গেল দুই চিত্র।
উড়িষ্যার তালসারি এলাকার মানুষের অভিযোগ, কোনও সরকারি সাহায্য তাঁরা পাচ্ছেন না। সেদিক থেকে বাংলা যথেষ্ট লাভবান। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘উড়িষ্যারসরকার ত্রাণশিবির করেছে বটে! তবে সেখানে ১-২ হাজার মানুষের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। গ্রামে তো ১০ হাজার মানুষ। ২ হাজার মানুষের থাকার ব্যবস্থা করলে কী হবে’? একইসঙ্গে তাঁরা বলছেন, ‘কোনওরকম খাবারদাবারেরও ব্যবস্থা হয়নি। শুধু ‘চুড়া গুড়’ (গুড় চিড়ে)-এর ব্যবস্থা হয়েছে। তাও যে ত্রাণশিবিরে গিয়ে থাকবে, সে পাবে’।
এখানকার মানুষের অভিযোগ, বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে রাজনীতির শিকার হচ্ছেন তাঁরা। বরং বাংলার মানুষ অনেক বেশি সুবিধা পাচ্ছেন বলে দাবি তাঁদের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তাঁরা। ‘দিদি’ ইয়াস মোকাবিলায় অনেক ব্যবস্থা নিয়েছেন বলেই দাবি তাঁদের।
তালসারির এক বাসিন্দার কথায়, ‘অনেক ভাল ব্যবস্থা করেছেন দিদি। সকলকে সতর্ক করছে লোকজন। সোমবার রাতে ঘরে ঘরে গিয়ে সবাইকে ডেকেছে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়ার জন্য। বলছে, খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে, তোমরা চলো’।
ইয়াস রাজনীতির বেড়াজাল মানে না। কিন্তু রাজনীতি তৈরি করে দিয়েছে বিভেদ। সেই বিভেদের ছবিই ফুটে উঠছে উপকূল এলাকায়। একদম বাংলা লাগোয়া উড়িষ্যার তালসারির উদয়পুর অঞ্চলের মানুষের অভিযোগ, এখানে রাজনীতির শিকার হচ্ছেন তাঁরা। তাই পর্যাপ্ত ত্রাণ, সরকারি সুবিধা পাচ্ছেন না। উল্টোদিকে, বাংলার ‘দিদি’ আগলে রেখেছেন তাঁর রাজ্যের মানুষকে। যশ মোকাবিলায় মমতার সরকারের ব্যবস্থায় ‘খুশি’ তাঁরা।