দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। এখন মারণ ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত রুখতে টিকাকরণের দিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ। যত বেশি টিকা, তত বেশি করোনার বিরুদ্ধে বর্ম। আর এভাবেই তৈরি হবে হার্ড ইমিউনিটি। এই পরিস্থিতিতে করোনার টিকাকরণ কর্মসূচীতে গতি আনতে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চার দফা প্রস্তাব দিলেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। পাশাপাশি রাজধানীতে ভ্যাকসিনের ঘাটতি নিয়েও এদিন কেন্দ্রকে একহাত নেন তিনি।
কেজরিওয়াল বলেন, অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ সারা দেশে আছড়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে হাত গুটিয়ে থাকলে চলবে না। তাই প্রথম প্রস্তাব হিসেবে তিনি বলেন, ‘ভারত বায়োটেক, যারা কোভ্যাক্সিন তৈরি করে, তারা টিকা উৎপাদনের ফর্মুলা বাদবাকি সংস্থাকে জানাতে সম্মত হয়েছে। দেশে এমন অনেক সংস্থা রয়েছে। তাই সরকারের যত দ্রুত সম্ভব, তাদের আলোচনায় ডেকে ভ্যাকসিন উৎপাদনের আদেশ দেওয়া উচিত৷ এখন যুদ্ধকালীন তৎপরতায়, সময়ের মধ্যে টিকা তৈরি করতে হবে। আমি অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে জানাতে চাই, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংস্থাগুলিকে এই নির্দেশ দেওয়া হোক। এখন এক একটা দিন গুরুত্বপূর্ণ।’
কেজরির দ্বিতীয় পরামর্শ, ‘সমস্ত বিদেশি ভ্যাকসিন প্রয়োগের ছাড়পত্র দেওয়া উচিত। এটাও যেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হয়। এতে দেরি করা ঠিক হবে না। আর বিদেশি ভ্যাকসিন নির্মাতাদের সঙ্গে সরকার নিজে কথা বলুক। এখন তো কেন্দ্র রাজ্যগুলির ঘাড়ে আলোচনার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছে। আখেরে এতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। কেন্দ্র কথা বললে নির্মাতা সংস্থাগুলি বিষয়টি অনেক গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।’ তৃতীয় প্রস্তাব হিসেবে তিনি বলেন, ‘মিডিয়ায় দেখছি, বেশ কয়েকটি দেশ নাকি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ভ্যাকসিন জমা করে রেখেছে। জনসংখ্যার চেয়ে সেখানে মজুত টিকার পরিমাণ অনেকটাই বেশি। সরকারের সেই সমস্ত দেশের কাছে ভ্যাকসিন চাওয়া উচিত৷’
শেষে কেজরি যোগ করেন, ‘সমস্ত বিদেশি ভ্যাকসিন উৎপাদক সংস্থাকে দেশে ভ্যাকসিন বানানোর অনুমতি দেখা হোক।’ এদিকে, নয়াদিল্লীতে ইতিমধ্যে ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের টিকাকরণ বন্ধ হয়ে গেছে। এ নিয়ে দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দিল্লীতে আপাতত যুবকদের ভ্যাকসিনেশন হচ্ছে না। কারণ, কেন্দ্রের পাঠানো সমস্ত ডোজ শেষ হয়ে গেছে। এটা খুব দুঃখের। প্রতি মাসে আমাদের ৮০ লক্ষ টিকা প্রয়োজন৷ কিন্তু মে মাসে আমরা মাত্র ১৬ লক্ষ ডোজ পাই। এমনকী আগামী জুন মাসে দিল্লীর কোটা কমিয়ে ৮ লক্ষ করা হয়েছে। প্রতি মাসে ৮ লক্ষ ডোজ পেলে গোটা রাজধানীতে ভ্যাকসিনেশন শেষ করতে ৩০ মাস সময় লাগবে। সেই ৩০ মাসে কোভিডের কত ওয়েভ আসবে আর তাতে কত মানুষ প্রাণ হারাবেন সেটা কল্পনাও করা যায় না।’