এ যেন আন্তরিকতার কাছে হার মানল প্রযুক্তি। কর্পোরেট মোদীকে হারিয়ে দিলেন আটপৌরে মমতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেসবুক লাইভের জনপ্রিয়তা দেখিয়ে দিল, কেবলমাত্র একটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকপ্রিয়তা, সারা দেশের শিল্পপতিখচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তুলনায় কয়েক হাজার গুণ বেশী।
ভার্চুয়াল দুনিয়ায় নরেন্দ্র মোদী পা রেখেছেন অনেক আগেই। এই ব্যাপারে কোনও দ্বিমত নেই। কিন্তু পিছিয়ে শুরু করেও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী অনায়াসে টপকে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। এই ব্যাপারেও সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। দুর্গাপুজো কার্নিভালের ফেসবুক লাইভ দেখলেই সেটা স্পষ্ট। অনুষ্ঠানের বিস্তৃতি বুঝে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেল লাইভ দেখিয়েছে সরাসরি। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর কার্নিভাল লাইভও লক্ষ মানুষ উপভোগ করেছেন। আর কালী পুজোর লাইভের দর্শক সংখ্যা টপকে গেছে কার্নিভালকেও। ৭ নভেম্বর কালী পুজোর দিন ফেসবুক লাইভে এসেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। শিরোনাম ‘আমার বাড়ির কালী পুজো’। ব্যস। সাধারণ মানুষ হামলে পড়েছেন। কয়েক মিনিটেই দর্শক সংখ্যা ২৬ হাজার। ঠিক তার আগের দিনই ফেসবুক লাইভে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। শিরোনাম ‘যখন বিরোধীরা নিজের ক্ষমতা কায়েম করতে চায়, তখন বিজেপি ভারতের ভবিষ্যৎ পরিবর্তন করতে চায়, পার্থক্য স্পষ্ট’। দর্শক সংখ্যা ২০ হাজার। হ্যাঁ, পার্থক্য স্পষ্ট।
এমন হাজারটা ফেসবুক লাইভের উদাহরণ দেওয়া যায়। দেওয়া যায় ফেসবুক বা টুইটারে করা পোস্টের উদাহরণ। দুলাইনের শুভেচ্ছা জানানো থেকে পিকচার পোস্টকার্ড – শেয়ার, লাইক, কমেন্টে শুধু একটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েও মমতা বারবার টপকে গেছেন মোদীকে।
অথচ প্রযুক্তির ব্যবহারে কোনও খামতি রাখেননি মোদী। তাঁর লাইভে ব্যবহৃত হয় কমপক্ষে ৮ থেকে ১০টি অত্যাধুনিক ভিডিও ক্যামেরা। সেখানে মমতা সাধারণ মোবাইলে তোলা ভিডিও-র মাধ্যমেই লাইভে আসেন। তারপরেও কীভাবে মোদীর জালে বলে বলে দশ গোল ঢোকাচ্ছেন মমতা? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পেশাদারি মনোভাবের কারণেই মোদীর কাজ অনেক সময়েই যান্ত্রিক হয়ে ওঠে। যা সাধারণ মানুষের কাছে বিরক্তিকর। অন্যদিকে মমতা আগাগোড়া আন্তরিক। সে মানুষের পাশে দাঁড়ানো থেকে রাজ্যের উন্নয়ন – সবেতেই। তাই আমজনতাও সদাসর্বদা মমতার পাশে থাকেন। আর এভাবেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী টপকে যান একটার পর একটা হার্ডল। কেন্দ্রের মোদী সরকারের রিপোর্ট কার্ডে ১০০ দিনের কাজে সেরার সেরা হয় বাংলার জেলা, বাংলার শিক্ষাক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্যের স্থান নেই জানিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক।
ফেসবুক লাইভেও মোদীর থেকে এগিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, এখন এই রিপোর্ট প্রকাশ হওয়াটাই শুধু বাকি!