গতবছর উম্পুনের স্মৃতি এখনও টাটকা গোটা দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দাদের। এবার ফের সেই স্মৃতি উস্কে দিয়ে আসতে চলেছে নতুন ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’। আগামী বুধবার রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলায় আছড়ে পড়তে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। শনিবার পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার পর থেকেই শক্তি সঞ্চয় করে ধীরে ধীরে তা ঘূর্ণিঝড়ের আকার নেবে। কিন্তু তা কতটা প্রবল হবে, সে ব্যাপারে কোনও স্পষ্ট ইঙ্গিত এখনও দিতে পারেনি আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তবে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতিতে কী ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের মোকাবিলা করা হবে, রাজ্যের সমস্ত জেলা প্রশাসনের জন্য সেই নির্দেশিকাই জারি করল নবান্ন।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের সমস্ত ছুটি আপাতত বাতিল করা হচ্ছে। জেলা এবং ব্লক স্তরের কন্ট্রোল রুমকে ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় রাখতে হবে। সেচ, কৃষি, মৎস্য, খাদ্য, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য-সহ সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখবে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কোনও এলাকায় যদি মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তা দ্রুত ঠিক করার জন্য টেলিকম সংস্থাগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে হবে। জেলা প্রশাসনকে এমনটাই জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
যে সব এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেই সব এলাকার মানুষদের ঝড়-বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে থেকেই নিরাপদ স্থানে সরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। স্থানীয় স্কুল-কলেজে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। ত্রাণ শিবিরে চিঁড়ে-গুড় জাতীয় শুকনো খাবার, প্যাকেট-জল, ত্রিপলের মতো ত্রাণসামগ্রী মজুত রাখতে হবে। কোভিড পরিস্থিতিতে ত্রাণ শিবিরে যাতে স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা থাকে, সেই বিষয়টিও মাথায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই সব এলাকায় দ্রুত উদ্ধারকার্যের জন্য ‘কুইক রেসপন্স টিম’ তৈরি রাখতে হবে।
এর পাশাপাশি সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের যাওয়া বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। গভীর সমুদ্রে কেউ আছেন কি না, তা জানতে আকাশপথে নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে উপকূল বাহিনীকে। কোনও এলাকায় গাছ পড়লে, বাঁধ ভাঙলে বা বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হলে তা দ্রুত মেরামতির জন্য আলাদা দল তৈরি রাখতে বলা হয়েছে জেলা প্রশাসনকে। তবে কোভিড পরিস্থিতির কারণে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে মাস্ক এবং পিপিই কিট মজুত রাখতে বলা হয়েছে।