গত বছর ঘূর্ণিঝড় আমফান বিপর্যয়ের ক্ষত এখনও পুরোপুরি সারেনি। বছরখানেকের মাথায় রাজ্যে ফের দেখা দিয়েছে আর এক ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগামী ২৩-২৫শে মে বঙ্গোপসাগরীয় উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’। বুধবার এ নিয়ে রাজ্যকে সতর্কবার্তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে নবান্ন।
পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহান্তে বঙ্গোপসাগরীয় এলাকায় একটি নিম্নচাপ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। ওই নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ২৫শে মে, মঙ্গলবার থেকে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছা়ড়া, কলকাতা লাগোয়া উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দিঘা, শঙ্করপুরের মতো সামুদ্রিক এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের কাছে একটি সতর্কবার্তায় কেন্দ্র জানিয়েছে, উত্তর আন্দামান সাগর-সহ বঙ্গোপসাগরের পূর্ব-মধ্য এলাকার উপরে ২২শে মে, শনিবার একটি নিম্নচাপ ঘনীভূত হতে পারে। তার পরের ৭২ ঘণ্টায় ওই নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে শক্তি বাড়িয়ে পরিণত হতে পারে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। সেটি পশ্চিমবঙ্গ এবং উড়িষ্যা উপকূলবর্তী এলাকার এগোতে পারে বলে সতর্কবার্তা কেন্দ্রের। এর জেরে ২৫শে মে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ঝো়ড়ো হাওয়ার সঙ্গে হাল্কা থেকে মাঝারি এবং কোথাও বা ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে রবিবার থেকেই আন্দামান এবং তার আশপাশে বঙ্গোপসাগরীয় এলাকায় ৪৫-৫৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। কোনও কোনও জায়গায় হাওয়ার গতি ঘণ্টা প্রতি ৫০-৬০ কিলোমিটার বা সর্বোচ্চ ৭০ কিলোমিটারও হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বাংলাদেশ এবং উড়িষ্যা উপকূলেও।
পাশাপাশি, বৃষ্টিপাত-সহ ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা থাকায় ২৪শে মে, সোমবার থেকেই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়া নিয়ে সতর্ক করেছে কেন্দ্র। যাঁরা ইতিমধ্যে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছেন, তাঁদের রবিবারের মধ্যে ফিরে আসার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রে খবর, উপকূলবর্তী সাইক্লোন সেন্টারগুলিকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরও পরিস্থিতি নিয়ে আগাম সতর্ক রয়েছে। ওই সেন্টারগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার, পানীয় জল, ওষুধ মজুত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য।