বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতে যখন করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোমর বেঁধে নেমেছে তৃণমূল সরকার, সংক্রমণ রুখতে রাজ্যজুড়ে কার্যত লকডাউন জারি করা হয়েছে, তখনই প্রায় পাঁচ বছরের পুরনো নারদকাণ্ডে অতিসক্রিয় হয়ে সোমবার রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র এবং প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। নারদ মামলায় এই সকল তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ। অথচ, বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতারা ব্রাত্য! সিবিআইয়ের এ হেন দ্বিচারিতা নিয়ে যখন সরব তৃণমূল, খোদ অভিযুক্ত তৃণমূল নেতারাও এই প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী এবং মুকুল রায়ের মতো বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে কেন পদক্ষেপ করছে না সিবিআই, তখন নিজেদের পেশ করা চার্জশিটেই সাফাই গেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাদের দাবি, বিজেপির এই দুই নেতা-সহ তৃণমূলের সাংসদ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও কোনওরকম পদক্ষেপ করার অনুমতি তারা পায়নি।
প্রসঙ্গয়, সোমবার, ১৭ মে, খানিকটা আচমকাই রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র এবং প্রাক্তন মন্ত্রী এবং মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। নিয়ম অনুযায়ী রাজ্যের বিধায়ক বা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি বা এই ধরনের কোনও আইনি পদক্ষেপ করার আগে তা বিধানসভার স্পিকার এবং সচিবালয়কে জানাতে হয়। শোভন এই মুহূর্তে রাজ্য বিধানসভার সদস্য না হলেও, এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া বাকি তিনজনই বিধানসভার সদস্য। সুতরাং তাঁদের গ্রেফতার করতে হলে আগে থেকে জানাতে হত স্পিকার এবং বিধানসভার সচিবালয়কে। কিন্তু রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি এই গ্রেফতারি নিয়ে তাঁর বা সচিবালয়ের কারও কাছেই কোনও তথ্য ছিল না। সিবিআইয়ের সাফাই, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর এই চার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের অনুমতি দেওয়ায় স্পিকারের অনুমতি নেওয়া হয়নি। এবং যে সময় নারদ কাণ্ড ঘটে সে সময় মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীরা সাংসদ ছিলেন। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের জন্য বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন। যা না মেলায় চার্জশিটে তাঁদের নাম রাখা যায়নি।