বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা কম হয়নি। তবুও সব বিঘ্নকে কাটিয়ে আজও একসুতোয় বাধা হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি। এবার ফের এই সম্প্রীতির নজির গড়ল বাংলাতে। তাঁরা ধর্মপ্রাণ মুসলিম হলেও, মানবিকতা ভুলে যাননি। তাই প্রতিবেশী হিন্দু পরিবারে মৃত্যুর খবর এল যখন, তাঁরা খুশির ঈদের উৎসব থামিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। করোনার ভয়ে কেউ সৎকারের কাজে হাত লাগাতে রাজি হননি। তাই মুসলিম প্রতিবেশীরাই এগিয়ে এলেন ধর্মের সংকীর্ণতাকে দূরে সরিয়ে।
আশিক মোল্লা, গোলাম সুবানী, গোলাম সাব্বার, শেখ সানি-রা হুগলির পোলবা-দাদপুর ব্লকের বাবনান গ্রামের বাসিন্দা। শুক্রবার ঈদের নামাজ পড়ে তাঁরা নিজেদের মতোই পালন করছিলেন উৎসব। এরই মধ্যে হঠাৎ খবর এল, পাশের গ্রামের ৭২ বছরের হরেন্দ্রনাথ সাধুখাঁ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মারা গিয়েছেন। গত তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। করোনা পরীক্ষা করার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে এই শোকই একমাত্র শোক নয়। তাঁরা শুনতে পেলেন, করোনা সংক্রমণের ভয়ে কেউ মৃতের বাড়ির চৌকাঠে পা দেননি।
তাঁর একমাত্র ছেলে দিশেহারা হয়ে সাহায্য চেয়েছেন, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেননি মৃতদেহ সৎকারের কাজে সাহায্য করতে। মৃতের ছেলে চন্দনের এই অসহায়তার কথা শুনেই উৎসব শিকেয় তুলে পাশে দাঁড়াতে বেরিয়ে পড়েন মুসলিম প্রতিবেশীরা। করোনার ভয় উপেক্ষা করে হাজির হন মৃতের বাড়িতে। নিজেরা খাট বেঁধে, ফুল মালায় সাজিয়ে তোলেন দেহ। চার ভিন্নধর্মী মানুষের কাঁধেই শেষ যাত্রায় যান হরেন্দ্রনাথ সাঁধুখা। শ্মশানেও কাঠ জোগাড় করা থেকে শুরু করে দাহ করার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ছিলেন তাঁরা।
