কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পের বাংলার কৃষকরা পেলেন প্রথম কিস্তির মাত্র ২ হাজার টাকা। কথা ছিল, বাংলার ক্ষমতায় এসে এক একজন কৃষকের অ্যাকাউন্টে ১৮ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। তবে এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যে কোথাও উঠে এল না সেই প্রতিশ্রুতি। বকেয়া কিস্তির প্রসঙ্গ পুরোপুরি এড়িয়েই গেলেন তিনি।
ভোটের প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলার কৃষকদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন, বকেয়া-সহ মোট ১৮ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে কৃষকদের। সরকারে এলে প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠকেই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে তা হয়নি। যদিও কৃষকদের স্বার্থে এই প্রকল্পটি কেন্দ্র সরকারের। বাংলার ক্ষমতায় না আসলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। কিন্তু এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘আজ সারাভারতের প্রায় ১০ কোটি কৃষক প্রকল্পের অষ্টম কিস্তির টাকা পাচ্ছেন। মোট ১৯ হাজার কোটি টাকা কৃষকদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাচ্ছে।’ এরপরই একপ্রকার ব্যঙ্গ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ বাংলার কৃষকরা প্রথম এই কিস্তি পেলেন। বাংলার কৃষকদের আরও সহায়তা করা হবে। যেমন যেমন নাম আসবে তেমনভাবে কিস্তির টাকা পৌঁছে যাবে।’ যা থেকে স্পষ্ট, বকেয়া সাত কিস্তির টাকা আর বাংলার কৃষকদের যে দেওয়া হবে না তা সুকৌশলে বুঝিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। অন্তত এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক কারবারীরা।
অনেক চাপানউতোরের পর তৃতীয়বারের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার ক্ষমতায় এসেই কৃষকদের প্রাপ্ত টাকা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন। এবার সেইমতো রাজ্যের ৭ লক্ষ কৃষকের অ্যাকাউন্টে ২ হাজার টাকা করে জমা করল কেন্দ্র। প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, বছরে মোট ৬ হাজার টাকা করে পাবেন একজন কৃষক। তারই প্রথম কিস্তি জমা করা হল, বাকি ৪ হাজার টাকা চলতি বছরেই আরও দু’টি কিস্তিতে জমা পড়বে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে। যদিও রাজ্যের দাবি, প্রায় ২০ লক্ষের নাম পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্র সরকারের কাছে, তার মধ্যে ১৩ লক্ষ কৃষক সুবিধা পেলেন না। তাই লড়াই করেছিলেন বলেই এই টাকা বাংলার কৃষকরা পেলেন বলে আগেই কৃষকদের বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবারবকেয়া টাকা না দেওয়ার জন্যও কেন্দ্রকে একহাত নিল তৃণমূল। তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েনের কটাক্ষ, কেন্দ্রের থেকে বাংলার ভাঁড়ারে প্রাপ্তি শূন্য। প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। তিনি বলেন, ‘বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে বাংলায় এসে কৃষকদের জন্য ১৮ হাজার টাকার কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে ২০০০ টাকা কেন?’