গত বিধানসভা নির্বাচনে প্রচারে এসে পি এম কিষান প্রকল্প ইস্যুতেই বারবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অভিযোগ ছিল রাজ্য সরকার কৃষকদের নামের তালিকা প্রকাশ না করাতেই নাকি বঞ্চিত হচ্ছেন বাংলার কৃষকরা। জনগণের কাছে আবেদন জানান, তারা ক্ষমতায় আসলে প্রত্যেক কৃষক যারা এই যোজনার আওতায় রয়েছেন তাদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি ১৮০০০ টাকা পৌঁছে যাবে। নির্বাচনের ফলাফলে ফের একবার রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকার। আর ফিরেই সেইসব সমালোচনার উত্তরে মোদী সরকারকে পত্রবাণ ছুঁড়েছেন মমতা। জানতে চেয়েছেন ‘কবে টাকা পাচ্ছেন বাংলার কৃষকরা’? চিঠিতে মমতা লেখেন, ‘কৃষকদের নাম পোর্টালে তুলে দেওয়া হয়েছে আশা করব, টাকাটা তাড়াতাড়ি দেওয়া হবে। পিএম কিষান যোজনায় ১৪.৯১ লক্ষ কৃষকদের নাম খতিয়ে দেখে তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছি’।
তবে এখানেই থেমে থাকেননি রাজ্যে তৃতীয়বার নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করা মুখ্যমন্ত্রী তথা ‘বাংলার অগ্নিকন্যা’। প্রধানমন্ত্রীর পর এবার সরাসরি রাজ্যের কৃষকদের উদ্দেশ্যে চিঠি লিখলেন মমতা। চিঠিতে আশ্বাস দিয়ে মমতা জানান, ‘আপনারা চিন্তা করবেন না। আপনাদের প্রাপ্য বকেয়ার জন্য আমরা লড়াই করব’।
শুধু তাই নয় এদিন পিএম কিষান যোজনার কথা বলতে গিয়ে রাজ্য সরকারের প্রকল্প কৃষক বন্ধুর কথাও টেনে আনেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি বলেন, দীর্ঘ টালবাহানা করে নানা অজুহাত দেখিয়ে কেন্দ্র সরকার কিষান সম্মান নিধি টাকা দিচ্ছিল না। ২০১৮ সালে এ রাজ্যে কৃষক বন্ধু যোজনা চালু হয়েছে। যা দেখি পরবর্তীতে ২০১৯ সালে পিএম কিষান যোজনার প্রচলন করে কেন্দ্র সরকার। তার মতে, পিএম কিষানের তুলনায় কৃষক বন্ধুর সুবিধা যে অনেক বেশি একথাও জানিয়ে দেন তিনি। তিনি লেখেন, ‘তুল্যমূল্য বিচারে আমাদের কৃষকবন্ধু প্রকল্পে সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি। এতে ভাগচাষি ও বর্গাদাররা অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। ভবিষ্যতে এর সুযোগ সুবিধা আরও বাড়ানো হচ্ছে’।
রাজ্য সরকারের লড়াইয়ের জন্যই পিএম কিষান সম্মান নিধির টাকা কৃষকদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছেছে বলেও চিঠিতে দাবি করেন মমতা। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘আপনাদের প্রাপ্য ছিল ১৮ হাজার টাকা। কিন্তু পাচ্ছেন অনেক কম। এইটুকুও পেতেন না যদি না আমরা আপনাদের হয়ে লড়াই করতাম। আপনারা চিন্তা করবেন না। আপনাদের প্রাপ্য বকেয়া আদায়ের জন্য আমরা সর্বদা লড়াই করব। ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন’।