শান্তি ফিরেছে আগেই, এবার পাহাড়ে ফিরছে গোল্ড কাপ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে আবারও শুরু হতে চলেছে বহু স্মৃতিবিজড়িত দার্জিলিং গোল্ড কাপ।
বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কালীপুজোয় যোগ দিতে এসেছিলেন জিটিএ–র চেয়ারম্যান বিনয় তামাং। সেখানেই এক ফাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিনয় দার্জিলিং গোল্ড কাপ নিয়ে কিছুক্ষণ আলোচনা করেন। ফেরার পথে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই ফের চেয়ারম্যানস গোল্ড কাপ শুরু হচ্ছে। তাঁর ইচ্ছেতেই জিটিএ–র তত্ত্বাবধানে এই প্রতিযোগিতা চলবে। ২ ডিসেম্বর হবে উদ্বোধন।
রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসই বুধবার জিটিএ–র চেয়ারম্যানকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে আসেন। গোল্ড কাপ আবার শুরু হবে শুনে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। অরূপের বক্তব্য, ‘এটা খুব ভাল উদ্যোগ।’
আজ, বৃহস্পতিবার বিনয় তামাং কলকাতায় আইএফএ–র ফুটবল কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করবেন। এছাড়া বিশিষ্ট প্রাক্তন ফুটবলার শ্যাম থাপার সঙ্গেও কথা বলবেন বিনয়। তবে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা আসবে বলে কথাও দিয়েছে। এছাড়া সিকিমের সঙ্গেও কথাবার্তা চলছে।
দার্জিলিং গোল্ড কাপ টুর্নামেন্টে একসময় কলকাতার মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল ও মহামেডানও অংশ নিত। ১৯৭৫–এ মোহনবাগান গোল্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়। ’৭৬–এ যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, ’৭৭–এ জর্জ টেলিগ্রাফ, ’৭৮–এ ইস্টার্ন রেল ও প্রিমিয়ার টায়ার যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন, ’৭৯–এ ফের মোহনবাগান, ’৮০–তে বিএসএফ জলন্ধর, ’৮১–তে ইস্টবেঙ্গল, ’৮২ আবার যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল, ’৮৩ নেপাল একাদশ, ’৮৪ মহমেডান, ’৮৫ ইস্টবেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন হয়।
এরপর পাহাড়ে সুভাষ ঘিসিংয়ের নেতৃত্বে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়, ভাঙচুর চলে। ফলে গোল্ড কাপ বন্ধ হয়ে যায়। ’৮৬ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত গোল্ড কাপের খেলা হয়নি। তবে ২০১০–’১১–য় ১ বছরের জন্য ফের খেলা শুরু হয়। চ্যাম্পিয়ন হয় টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি। ২০১২ থেকে ২০১৩ খেলা বন্ধ ছিল। ২০১৪–য় আবার খেলা শুরু হয়। তারপর বন্ধ হয়ে যায়।
১৯৭৬–এ ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক ছিলেন গৌতম সরকার। সেই বছর গোল্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন হয় ইস্টবেঙ্গল। এই কাপ আবার চালু হচ্ছে শুনে এদিন গৌতমবাবু বলেন, ‘খুব আনন্দের সংবাদ। পাহাড়ের ছেলেরা ফুটবল ছাড়া কিছু জানে না। ওদের মনোবল আরও বাড়বে।’
বিশিষ্ট প্রাক্তন ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্ত বলেন, ‘১৯৭৬ থেকে কয়েকবছর আমি গোল্ড কাপে খেলেছি। মাঠ ছোট। দর্শক হত প্রচুর। খেলতে ভাল লাগত।’