তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েই শীতলকুচিতে ১২৬ নম্বর বুথে দুষ্কৃতীদের গুলিতে বয়স ১৮-র আনন্দ বর্মণ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার সংখ্যালঘু ব্যক্তির মৃত্যু নিয়ে একের পর এক পদক্ষেপ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার প্রথমেই সাসপেন্ড করা হয়েছিল কোচবিহারের এসপি দেবাশিস ধরকে। এরপর বৃহস্পতিবার সিট গঠন করে পূর্ণাঙ্গ ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি, মৃত ব্যক্তিদের সরকারি চাকরি দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন মমতা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, সেই সাহায্য নিতে এবার এগিয়ে এলেন আনন্দ বর্মনের পরিবার। এদিন কোচবিহারের জেলা তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতীম রায়ের সঙ্গে দেখা করেন আনন্দ বর্মনের মা। সেখানেই তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী যে সাহায্য ঘোষণা করেছেন, তা তাঁরা নিতে চান। এর আগে আনন্দের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছিল, ছেলের বিচার চাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহায্য তাঁরা নেবেন না। সেই অবস্থান থেকে তাঁরা সরে এলেন।
প্রসঙ্গত, চতুর্থ দফা ভোটের দিন কোচবিহারের শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় ফুঁসে উঠেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাথাভাঙায় গিয়ে জানিয়ে এসেছিলেন, ক্ষমতায় আসা মাত্রই ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি নিহতদের পরিবারগুলিকেও দেখবেন তিনি। সেই মতোই ওই ঘটনায় মৃতদের পরিবারের জন্য বৃহস্পতিবারই সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও ওই ঘটনা নিয়ে বিজেপি তথা অমিত শাহ মেরুকরণের রাজনীতি শুরু করে দিয়েছিলেন। ‘শীতলকুচির অপর বুথে মৃত্যু হয়েছিল আনন্দ বর্মণের। তিনি কি বাংলার ছেলে ছিলেন না?’, এমন মন্তব্য করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মৃত্যুর রাজনীতি করছেন বলে সরব হয়েছিলেন বহু মানুষ। মমতা মাথাভাঙা যাওয়ার দিনেও সেখানে আনন্দের দাদু উপস্থিত হয়েছিলেন। বিজেপি যদিও দাবি করেছিল, জোর করে আনন্দের দাদুকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁর পরিবার তৃণমূলের কোনও সাহায্য চায় না। কিন্তু এবার আনন্দের পরিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত ক্ষতিপূরণ নিতে রাজি হয়ে গেলেন। যা বিজেপির বিড়ম্বনা বাড়াল।