স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে জিদান বাহিনীকে হারিয়ে দিয়ে এবার ম্যাঞ্চেস্টার সিটির পর চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠল ইংল্যান্ডের আরও একটি দল। ১৩ বারের চ্যাম্পিয়নস লিগ বিজয়ী ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ। সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে তাদেরকে হারিয়ে দিয়ে ফাইনালে উঠল টমাস টুচলের চেলসি। এবার চূড়ান্ত যুদ্ধে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির মুখোমুখি হবে তারা।
সেমিফাইনালের গণ্ডি টপকাতে হলে গতকাল চেলসিকে গোলশূন্য ড্র করলেই চলত। গত সপ্তাহে মাদ্রিদের ঘরের মাঠে গিয়ে অ্যাওয়ে গোল করে আসার সুবাদে সুবিধাজনক জায়গায় ছিল লন্ডনের ক্লাবটি। প্রথম পর্বে খেলার ফল ছিল ১-১। ফলে ফাইনালে উঠতে হলে রিয়ালকে জিততেই হত। যেই কারণে রেফারির বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়াতে থাকে জিদান ব্রিগেড। ৩-৪-৩-এর বদলে ৪-৩-৩ ফর্মেশনে ঘুঁটি সাজিয়েছিলেন জিদান। ডিফেন্সে অধিনায়ক সার্জিও র্যামোস ও ফরোয়ার্ড লাইনে এডিন হ্যাজার্ডের প্রত্যাবর্তন দলকে বাড়তি অক্সিজেন জোগায়।
অন্যদিকে টমাস টুচল চিরাচরিত ৩-৪-৩ নকশাতেই আস্থা রেখেছিলেন। উইং ব্যাকে রিস জেমসের বদলে সিজার অ্যাজিপিলিকুয়েটা মোতায়েন থাকায় রক্ষণ আরও আঁটোসাঁটো হয়। পায়ে বল না থাকলেই চেলসি ৫-৩-২-এ এবং কাউন্টার অ্যাটাকের সময় ৩-৩-৪-এ ফর্মেশন বদলে ফেলে। হাইলাইন ডিফেন্স থাকায় মাউন্ট-ওয়ার্নার-হাভার্জের ত্রিফলা জুটির গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে কালঘাম ছোটে রিয়ালের। পাশাপাশি এনগোলো কান্তে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে না খেলে মাঠের আরও উপরের দিকে চলে আসায় মাঝমাঠ থেকে চোরা পাস বের করতে ব্যর্থ হন টনি ক্রুস আর লুকা মড্রিচ।
গতকাল চেলসির আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়েরা রিয়াল মাদ্রিদের সাপ্লাই লাইনের মুখ বন্ধ করায় হ্যাজার্ড-বেঞ্জিমা-ভিনিসাসের জুটি স্ট্রাইকারে একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে বেঞ্জিমাকে নীচে নেমে আসতে হয়। আর সদ্য চোট সারিয়ে ফেরা হ্যাজার্ড আগের ফর্মে না থাকায় প্ল্যান বি-তেও গোলের দরজা খোলে না। উল্টে মাঝমাঠ থেকে বল দখল করে এগিয়ে যায় চেলসি। হাভার্জের চিপ গোলপোস্ট ছুঁয়ে নীচে নামার পর উপস্থিত বুদ্ধির জেরে তাকে হেড করে জালে জড়িয়ে দেন তাঁর জার্মান সঙ্গী ওয়ার্নার।
প্রথমার্ধে লিড নেওয়ার জের সেকেন্ড হাফে লক্ষ্য করা যায়। রিয়ালের একের পর এক ছোট-বড় পাস দক্ষতার সঙ্গে সামাল দেয় থিয়াগো সিলভার নেতৃত্বাধীন চেলসির ডিফেন্স। ফলত মরিয়া হয়ে আক্রমণের ধার বাড়ায় রিয়াল। যার জেরে কাউন্টার অ্যাটাকের সুযোগ পায় টুচলের দল। ঠিক এই সময় ওয়ার্নারকে তুলে পুলিসিচকে নামানোয় আক্রমণের গতি আরও বাড়তে থাকে। একের পর এক গোলের সুযোগ পেলেও হাভার্জ, কান্তেরা কাজে লাগাতে পারেননি। অবশেষে ম্যাচের শেষের অন্তিম লগ্নে খুলে যায় দ্বিতীয় গোলের দরজা। পুলিসিচের পাস থেকে বল জালে ঠেলেন মাউন্ট। ২-০-তে এগিয়ে ম্যাচ পকেট পুরে ফেলে চেলসি।