অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস যে ভরাডুবির কারণ, তা হারে হারে টের পেল বিজেপি। কর্নাটকে গোহারান হারতে হল গেরুয়া শিবিরকে।
রাজ্যের তিনটি লোকসভা ও দুটি বিধানসভা আসনের উপ নির্বাচনে এক প্রকার ভরাডুবি হল নরেন্দ্র মোদীর দলের। তিনটি লোকসভা আসনের মধ্যে দু’টিতেই হারলেন বিজেপি প্রার্থীরা। একটি আসন পেল কংগ্রেস, অন্যটি পেল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়ার দল জেডি (এস)। বিজেপিকে আরও হতাশ করল বেলারি লোকসভা আসনের ভোটের ফলাফল। ২০০৪ সাল থেকে বিজেপির হাতে থাকা বেলারি লোকসভা আসনে এ বার জয়ী হয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী। কর্নাটক বিধানসভার যে দু’টি আসনে উপনির্বাচন হয়েছিল, তার একটিতে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। অন্যটি পেয়েছে জেডি (এস)। ফলে, বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনেও হতাশ হতে হল বিজেপিকে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, কর্নাটক ভোটের ফলাফল বুঝিয়ে দিল ২০১৯ লোকসভা ভোটে বিজেপিকে হারাতে প্রয়োজন জোট৷ সেই প্রাসঙ্গিকতা আগেই উপলব্ধি করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই বিজেপি বিরোধী জোটকে এককাট্টা করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। এখন অন্যান্য বিরোধী দলগুলি জোট প্রাসঙ্গিকতা উপলদ্ধি করতে পারলে, মোদী বিরোধী জোট বাস্তবে রূপ নিতে পারে৷ তখন বদলে যেতে পারে অনেক অঙ্কই৷
কর্ণাটকের শিবমোগা, বেলারি ও মান্ডিয়া লোকসভা আসনে উপ-নির্বাচন হয়েছিল৷ এর মধ্যে শিবমোগা ও বেলারি বিজেপির দখলে ছিল৷ মান্ডিয়া ছিল জেডিএসের দখলে৷ ভোটের ফল পুরো উলটো হয়ে গিয়েছে৷ শিবমোগা আসনটি বিজেপি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে৷ বাকি দু’টি লোকসভা আসন পেয়েছে কংগ্রস-জেডিএস জোট৷ অন্যদিকে বিধানসভার দু’টি আসনের ফলাফল অপরিবর্তিত থেকে গিয়েছে৷ জামখণ্ডি কংগ্রেসের দখলে ছিল৷ রমনগরা ছিল জেডিএসের দখলে৷ ওই দু’টি আসেন প্রত্যাশিতভাবে জয় পেয়েছে কংগ্রেস-জেডিএস জোট৷
কয়েক মাস পরই লোকসভা ভোট৷ তার আগে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন৷ এই পরিস্থিতিতে কর্ণাটকের ফল বিজেপিকে স্বাভাবিকভাবেই চাপে ফেলে দিল৷ কারণ, কয়েক মাস আগে কর্ণাটকে ভালো ফল করেছিল বিজেপি৷ কিন্তু কংগ্রেস-জেডিএস জোট হতেই চিত্রটা বদলে গেল৷ কংগ্রেস-জেডি হাত মিলিয়ে নিজেদের দুর্গ রক্ষা তো করলই, সঙ্গে বিজেপির থেকে একটি আসন কেড়েও নিল৷
ভোটের ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই নয়াদিল্লির চব্বিশ নম্বর আকবর রোডে কংগ্রেসের সদর দফতরের সামনে আগাম দিওয়ালি শুরু হয়ে গিয়েছে। বাজি, বাদ্যি, স্লোগানে জমজমাট ব্যাপার। উল্টোদিকে দীনদয়াল উপাধ্যায় রোডে বিজেপি সদর দফতর খাঁ খাঁ করছে। ঘরোয়া আলোচনায় দলের এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের ফলেই এই ভরাডুবি হল। কর্নাটকে বিধানসভা ভোটে ফল বেরনোর চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই ইয়েদুরাপ্পা ও শ্রীরামুলুর লোকসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার দরকার ছিল না। সে জন্য ৬ মাস সময় ছিল। কিন্তু বাড়াবাড়ি করতে গিয়েই বিপদ হল।