২০১৯ থেকেই তিনি জেলবন্দী। তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ এনেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। সেই অখিল গগৈ এবার আসাম বিধানসভা নির্বাচনে শেষ হাসি হাসলেন। রাজনৈতিক জীবন শুরু করে শিবসাগর আসন থেকে জয়ী হয়েছেন ওই কৃষক নেতা।
এবার বিজেপির গলার কাঁটা ছিল নাগরিক পঞ্জি থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। তা নিয়ে ছিল প্রবল জনরোষও। তার উপর অসমীয়া জাতীয়তাবাদের জিগির তুলে আসরে নেমেছিল ‘অসম জাতীয় পরিষদ’ নামের নতুন এক রাজনৈতিক দল। ফলে এবারের ভোটে আসামে টক্কর যে কাঁটায় কাঁটায় তা বলেই দিয়েছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কিন্তু সব সমীকরণ বদলে দিয়ে, সমস্ত জল্পনাকে ভুল প্রমাণিত করে আসামে ফের ক্ষমতা দখল করেছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু শত বাধা কাটিয়ে বিজেপির গড় শিবসাগর দখল করলেন অখিল গগৈ। তিনি পেয়েছেন ৫৭ হাজার ২১৯ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দী বিজেপির সুরভী রাজকোঁওরি পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৩৪৪টি ভোট। বিশ্লেষকদের মতে, উগ্র অসমীয়া জাতীয়তাবাদের যে টোপ ‘অসম জাতীয় পরিষদ’ দিয়েছিল তা মানুষ নেয়নি। কিন্তু কৃষকনেতা ও সমাজকর্মী অখিলের প্রতি বরাবরই আসামের জনতার একটা অংশের সমর্থন ছিল। কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত না থাকা ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্যও ‘রাইজর দল’-এর প্রধান সাফল্য পেয়েছেন। জেলে থাকার দরুণ সেই অর্থে প্রচার না করতে পারলেও জনতা অখিলের পাশে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, আসামের ১২৬টি আসনের মধ্যে বিজেপি জোটের দখলে ৭৫টি আসন। অর্থাৎ ম্যাজিক ফিগার ৬৪ স্বচ্ছন্দে পেরিয়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। রাজ্যের শাসকদলের শরিক ‘অসম গণ পরিষদ’ ও ‘ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেল’ ভাল ফল করেছে। অন্যদিকে, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ‘মহাজোট’ হম্বিতম্বি করলেও ৫০টি আসন পেয়েছে তারা। বদরুদ্দিন আজমলের ‘অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট’ ও হাগ্রামা মহিলারির ‘বড়োল্যান্ড পিপলস ফ্রন্টে’র সঙ্গে কংগ্রেসের জোট যে আশানুরূপ ফল দেয়নি, তা বেলা গড়াতেই স্পষ্ট। একইভাবে প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠন ‘অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ বা আসু সমর্থিত ‘অসম জাতীয় পরিষদ’ও এই নির্বাচনে তেমন ছাপ ফেলেনি।