দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আর তার জেরে প্রতিদিন ঝড়ের গতিতে বাড়ছে দেশের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় নতুন নজির গড়েছে ভারত। লম্বা হচ্ছে মৃত্যু মিছিলও। তবে এই পরিস্থিতিতে যখন ‘নাভিশ্বাস’ দশা ভারতবাসীর, তখন কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রকের রিপোর্টে অক্সিজেন রপ্তানির সূচকে ‘শ্রীবৃদ্ধি’। মন্ত্রকের তরফে দাবি করা হয়েছে, এই বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত অক্সিজেনের রপ্তানি বেড়েছে ৭০০ শতাংশ। বিশেষজ্ঞদের দাবি, গত অর্থবর্ষের তুলনায় এই অর্থবর্ষে রপ্তানি পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। যেখানে দেশের হাসপাতালগুলিতে এই মুহূর্তে অক্সিজেনের আকাল।
প্রসঙ্গত, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে হিমশিম খাচ্ছে দেশবাসী। গত কয়েকদিন আগেই অবশ্য কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শিল্পের জন্য অক্সিজেন উৎপাদন কমিয়ে, বাড়ানো হবে স্বাস্থ্যের জন্য অক্সিজেনের পরিমাণ। সেই সিদ্ধান্তের কয়েকদিনের তফাতে প্রকাশিত হল কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের অক্সিজেন রপ্তানি নিয়ে এই রিপোর্ট। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২০ সালে এপ্রিল মাস থেকে ২০২১ সালে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ৯ হাজার মেট্রিক টন অক্সিজেন রপ্তানি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০ অর্থবর্ষে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। আর বাকি রপ্তানি এই বছরের জানুয়ারি মাসের পর থেকে। যার পরিমাণ ৭৩৪ শতাংশ।
২০১৯ সালে ভারতের অক্সিজেন রপ্তানির পরিমাণ ছিল মাত্র ২১৯৩ মেট্রিক টন। যদিও এই বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের পরিসংখ্যান এখনও প্রকাশ করা হয়নি। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই অবশ্য সরকারকে খোঁচা দিয়েছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, দেশের অক্সিজেন সংকট কেন, তা সরকারি পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। প্রশ্ন উঠছে, দেশ জুড়ে যখন দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের ঘাটতি, একাধিক রাজ্য থেকেই অক্সিজেনের অভাবে বিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছে, তখন নিজের ঘর না সামলে, ভবিষ্যতে বিপদের কথা চিন্তা না করে কেন টনের পর টন অক্সিজেন বিদেশে রপ্তানি করা হল? অক্সিজেন নিয়ে মোদী সরকারের এই নীতি ঠিক কতটা যুক্তিযুক্ত?