কোভিড অতিমারীকালে ভোটের সময় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার কমিশনকে একহাত নিয়ে কার্যত তুলোধোনা করলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান টিবি রাধাকৃষ্ণণ। তাঁর কথায়, মহামারী পরিস্থিতি শুধুমাত্র সার্কুলার দিয়ে জনগণকে সতর্ক করে দায় ঝেড়ে ফেলতে পারে না কমিশন। আদালতের মতে, কমিশন নিজেদের ক্ষমতার সঠিক ব্যবহার করেনি।
করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যে আট দফায় ভোট চলছে। আর সেই ভোটের আগে দেদার প্রচার সারছেন প্রার্থী ও দলীয় নেতা-কর্মী। সেই সমস্ত প্রচারসভায় কোভিডবিধি মানার পাটবালাই নেই। স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। এই পরিস্থিতি ভোটের প্রচার বন্ধ করার আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে জোড়া জনস্বার্থ মামলা হয়। সেই শুনানিতে বৃহস্পতিবার কমিশনকে তুলোধোনা করলেন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি।
টিবি রাধাকৃষ্ণণের পর্যবেক্ষণ, করোনাকালে ভোট ব্যবস্থাপনায় দায়সারা কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। ডিভিশন বেঞ্চ বলে, “করোনা মহামারীর মধ্যে এই ভাবে শুধুমাত্র সার্কুলার দিয়ে নিজের দায় ঝেড়ে ফেলতে পারে না কমিশন। সবকিছু মানুষের উপর চাপিয়ে দিতে পারে না কমিশন।” এ প্রসঙ্গে আদালত আরও বলে, নির্বাচন কমিশন অসীম ক্ষমতার অধিকারী। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয়নি। কমিশনের আধিকারিক ও কুইক রেসপন্স টিমকে কাজে লাগানো হচ্ছে না।
পাশাপাশি এবিষয়ে বলতে গিয়ে প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার টিএন সেশনের কথা তুলে আনেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি। বলেন, “প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার টিএন সেশনের ১০ শতাংশ কাজ এই নির্বাচন কমিশন করতে পারবে কি না আমার সন্দেহ। প্রয়োজনে আমরা সেশনের কাজ করব।” প্রধান বিচারপতির ভর্ৎসনা, “কমিশন চূড়ান্ত অদক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে।” তিনি আরও জানান, আদালতে কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি না থাকায় এদিন কোনও নির্দেশ জারি করা হয়নি। কিন্তু ভবিষ্যতে এই নিয়ে নির্দেশ জারি করতে পারে মন তাঁরা।