দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আর তার জেরে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। ইতিমধ্যেই দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে দেড় লক্ষ। এই পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন অংশে আংশিক লকডাউনের কারণে ফের কর্মীছাঁটাই শুরু হয়েছে। যার ফলে মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে বেকারত্বের হার। সোমবার তাদের রিপোর্টে এমনটাই জানিয়েছে অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সিএমআইই)। ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এক সপ্তাহের যে পরিসংখ্যান পাওয়া গিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে বেকারত্বের হার ৮.৬ শতাংশ ছুঁয়েছে।
অথচ, তার মাত্র দু’সপ্তাহ আগে, অর্থাৎ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আংশিক লকডাউন যখনও শুরু হয়নি, তখন বেকারত্বের হার ৬.৭ শতাংশ ছিল। গত বছর গোটা দেশে দীর্ঘ লকডাউনের ফলে সব থেকে বেশি ভুগতে হয়েছিল পরিযায়ী শ্রমিকদের। গাড়ি, বাস, ট্রেন না পেয়ে পায়ে হেঁটে হাজার হাজার কিলোমিটার পথ পেরিয়ে নিজের বাড়িতে পৌঁছেছিল তাঁরা। মাঝ রাস্তায় প্রাণ হারানোয় বাড়ি ফেরাও হয়ে ওঠেনি অনেকের। এ বারেও সেই একই পরিস্থিতির মুখে পড়ার ভয়ে ইতিমধ্যেই শহর ছাড়তে শুরু করেছে পরিযায়ী শ্রমিকরা। বিভিন্ন সংবাদপত্রে সেই ছবি প্রকাশিত হয়েছে। এর জেরে শহরগুলিতে বেকারত্বের হার ১১ এপ্রিল পর্যন্ত শেষ হওয়া সপ্তাহে বেড়ে ১০ শতাংশ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বে করোনা সংক্রমণের নিরিখে ফের ব্রাজিলের কাছ থেকে দ্বিতীয় স্থান ছিনিয়ে নিয়েছে ভারত। এক দিনে রেকর্ড ১,৬৮,৯১২ জনের সংক্রমণ ভারতকে তালিকার উপরের দিকে নিয়ে গিয়েছে। এর ফলে ভারতে মোট করোনা সংক্রামিতের সংখ্যা ১.৩৫ কোটি হয়েছে। ফের করোনাভাইরাস সংক্রমণ দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালগুলি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সংক্রমণ ঠেকাতে তৎপর হয়ে একাধিক পদক্ষেপ করছে রাজ্যগুলিও। ইতিমধ্যেই, সপ্তাহান্তে সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছে মহারাষ্ট্র। অন্যদিকে, দিল্লীতে নাইট কার্ফু জারি করেছে প্রশাসন।
গত বছর করোনা পরবর্তী লকডাউনের কারণে বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক কাজের জায়গা ছেড়ে নিজেদের বাড়ি ফিরতে শুরু করায় বেকারত্বের হারও অনেকটাই বেড়ে যায়। কিন্তু, তারপর কলকারখানা ফের খোলা শুরু হওয়ায় এবং সবাইকে অবাক করে দিয়ে সংক্রমণের হার কমতে থাকায় শ্রমিকরা ফের কাজের জায়গায় ফেরা শুরু করে। যার ফলে বেকারত্বের হারও কমতে থাকে। যদিও করোনা সংক্রমণ ঊর্ধমুখী হওয়ায় আগের সমস্ত অনুমান ব্যর্থ হয়েছে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের পর মার্চে কর্মসংস্থান সব থেকে দ্রুতগতিতে হ্রাস পেয়েছে বলে জানিয়েছে আইএইচএস মার্কিটের সমীক্ষা। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কনজিউমার কনফিডেন্স সার্ভে একই ছবি তুলে ধরেছে-চাকরি নিয়ে মানুষের মনে সংশয়, দুশ্চিন্তা।