এবার উত্তপ্ত জনরোষের মুখে পড়লেন কেতুগ্রামের বিজেপি প্রার্থী। ঘড়ির কাঁটা তখন দুপুর ২টো পেরিয়েছে। কৃষিজীবী প্রভাবিত কেতুগ্রামের চেঁচুড়ি গ্রামের অধিকাংশ মানুষ তখন মাঠের কাজ সেরে বাড়ি ফিরেছেন। কেউ স্নান করছেন, কেউ বসেছেন দুপুরের খাবার খেতে। বাড়ির মহিলারা ভাত বাড়ার তোড়জোড় করছেন। এমন সময় পাড়ার রাস্তা থেকে ভেসে এল মমতা-বিরোধী স্লোগান। শুনেই ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন মহিলা-পুরুষ সকলে। দেখলেন গেরুয়া পোশাক পরে র্যালি করে গ্রামের রাস্তায় এগিয়ে আসছেন কেতুগ্রামের বিজেপি প্রার্থী অনাদি ঘোষ। প্রার্থীকে দেখেই মেজাজ হারালেন সকালে। কেউ খাবার ছেড়ে, কেউ স্নান করতে করতে গামছা পরে ছুটে এলেন। মহিলারা বাঁশ-লাঠি-ঝাঁটা নিয়ে প্রার্থীকে তাড়া করলেন। সঙ্গে পুরুষ গ্রামবাসীরা। প্রার্থীর সঙ্গে থাকা কয়েকজন বিজেপি কর্মীকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। গ্রামবাসীর তাড়া খেয়ে মাঠ দিয়ে ছুটে পালিয়ে যান প্রার্থী সহ বিজেপি কর্মীরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেতুগ্রামের চেঁচুড়ি গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে কেতুগ্রাম থানার আইসির নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পাশাপাশি এদিন লাভপুর বিধানসভার সোমডাঙায় বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ মণ্ডল প্রচারে গেলে তাঁকে ঝাঁটা, জুতো দেখানো হয়। খুঁটিতে দড়ি বেঁধে ঝাঁটা, জুতো ও চটি টাঙিয়ে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, এদিন দুপুরের দিকে কেতুগ্রামের বিজেপি প্রার্থী প্রচারে যান। সেই সময় প্রথমে মাইক বাঁধা টোটো থেকে নামিয়ে বিজেপি কর্মীদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আক্রান্ত কর্মী শেখ আকবরের অভিযোগ, তাঁর গলা টিপে ধরা হয়। এমনকী গুলি করে মেরে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। মহিলারা চিৎকার করে বলতে থাকেন, আমরা নিজের মেয়েকেই চাই। এরপরেই তাঁরা বিজেপি প্রার্থীকে তাড়া করেন। মারের ভয়ে জমির আল বরাবর ছুটে পালাতে বাধ্য হন প্রার্থী সহ বিজেপি কর্মীরা। গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বিজেপি প্রার্থী প্ররোচনামূলক স্লোগান দিচ্ছিলেন। এতেই মানুষ খেপে গিয়ে রে রে করে তেড়ে যান। যদিও বিজেপি প্রার্থী বলেন, “তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমাকে মারবে বলেই এসেছিল। ওরা আমাকে প্রাণে মারতে চেয়েছিল। কিন্তু কর্মীরা আমাকে ঘিরে থাকায় পেরে ওঠেনি। আমার কর্মীদের মেরেছে।” তৃণমূল প্রার্থী শেখ শাহনওয়াজ বলেন, “তৃণমূল কাউকে মারধর করেনি। মানুষ বিজেপির উপর বিরক্ত। ওরা প্ররোচনা ছড়াচ্ছিল। তার জন্যই হয়তো গ্রামবাসীরা এলাকায় বিজেপিকে ঢুকতে বাধা দিয়েছে।”