লকডাউন পরবর্তী পরিস্থিতিতে দেশে যে হারে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে, তা নিয়ে সিঁদূরে মেঘ দেখছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। মূলত পেট্রোল-ডিজেল এবং ডাল, ভোজ্য তেলের মতো ছ’প্রকার খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিই এখন তাদের কাছে চরম উদ্বেগের কারণ। আর এবার তার জেরেই সুদের হারে পরিবর্তন না করার সিদ্ধান্তই নিল আরবিআই। তিনদিন ধরে নীতি নির্ধারণ কমিটির বৈঠকের পর। এই নিয়ে লাগাতার প্রায় ন’মাস সুদের হারে কোনও বদল ঘটায়নি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নীতি নির্ধারণ কমিটি। অর্থাৎ রেপো ও রিভার্স রেপো রেট একই থাকছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নীতি নির্ধারণ কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যদি মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে অবিলম্বে কোনও স্থিতিশীল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে না পারে, তাহলে পরিস্থিতি আরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কার মধ্যেই আবার করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি ও লকডাউনের সম্ভাবনা রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে বড়সড় চিন্তায় ফেলেছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস নীতি নির্ধারণ কমিটির বৈঠকের পর বলেছেন, ‘আর্থিক বৃদ্ধির পথে একমাত্র সংশয়ের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনার নতুন সংক্রমণ এবং লকডাউনের হাতছানি।’
উল্লেখ্য, বিভিন্ন রাজ্যে ইতিমধ্যেই আংশিক লকডাউন ও নাইট কার্ফু চালু হয়েছে। তাই বিভিন্ন শিল্পোৎপাদন ও পণ্যের চাহিদায় ভাটা পড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রবণতা বাড়তে থাকলে আবার গত বছরের মন্দার স্মৃতি ফিরে আসতেই পারে। শক্তিকান্ত জানান, ‘গ্রামীণ ভারতের চাহিদা ও উৎপাদনের প্রবণতা বৃদ্ধি এখনও অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হয়েই রয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক মনে করছে, অর্থনীতির প্রায় প্রতিটি মাপকাঠিই এখনও ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু এই প্রবণতা ধরে রাখা যাবে কি না, তা নির্ভর করবে করোনা সংক্রমণে নিয়ন্ত্রণ এবং ভ্যাকসিন প্রদানের হারের ওপর।’