মাস খানেক আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘শাড়ি ছেড়ে বারমুডা পরুন দিদি’ বলে কটাক্ষ করে বিতর্ক বাঁধিয়েছিলেন তিনি। তার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের ‘শিল্পীদের রগড়ে দেব’র মতো বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন তিনি। শিল্পীদের নিয়ে তাঁর সেই কড়া মন্তব্যে তিনি যে একশো শতাংশ অনড়, এবার তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব ভঙ্গিতেই তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, শিল্পীরা কোনও কাজ করেন না। সারাজীবন বিতর্কই করেছেন। এদিকে, দিলীপের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করলেন তাঁরই দলের সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। বিধানসভা নির্বাচনে চুঁচুড়ার বিজেপি প্রার্থী বললেন, ‘এই ধরনের মন্তব্য আমি সমর্থন করি না। এবং এটা আমার কাছেও অত্যন্ত অসম্মানজনক।’
সম্প্রতি এক বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, বুদ্ধিজীবীরা সমাজের বোঝা। নির্বাচন উপলক্ষে বিজেপি বিরোধী একটি গান প্রসঙ্গে, প্রশ্নের উত্তরে তাঁর জবাব ছিল, ‘আমি শিল্পীদের বলেছি, আপনারা গান গান, নাচুন। ওটা আপনাদের শোভা পায়। রাজনীতি করতে আসবেন না। ওটা আমাদের জন্য ছেড়ে দিন। নাহলে রগড়ে দেব। আর শিল্পীরা জানেন, আমি কীভাবে রগড়াই।’ তাঁর এই মন্তব্যের পরই শিল্পীমহলে ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় বিতর্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই এই মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা শুরু করেন। তবে এসব সত্ত্বেও মঙ্গলবার দিলীপ ঘোষ স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি তাঁর মন্তব্যে অনড়। এবং একইসঙ্গে বলেছেন, শিল্পীরা শুধু বিতর্ক করতেই জানেন।
এদিকে, মঙ্গলবার সকালে লকেটের সমর্থনে রোড শো করতে চুঁচুড়ায় পৌঁছন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। লকেটকে সঙ্গে নিয়ে প্রায় তিন কিলোমিটারের বেশি ওই রোড শোয়ের শেষে সেই বিতর্কিত প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আবার নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেন দিলীপ ঘোষ। আর তারপরই তাঁর মন্তব্যের সমালোচনা করেন বিজেপি প্রার্থী। তিনিও যে অন্য শিল্পীদের মতোই এই মন্তব্যকে সমর্থন করেন না, তা স্পষ্ট জানিয়ে দেন। কর্মসূচী শেষে ব্যান্ডেলের বাড়িতে বসে বলেন, ‘আমি নিজেও একজন শিল্পী। আমি জানি, সিনেমা, টিভিতে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কতটা কষ্ট করে কাজ করেন। লাইট, সাউন্ড, ক্যামেরা, দর্শক আমাদের কাছে ভগবান। আমার অন্য সহ-শিল্পীরা কী মন্তব্য করেছেন জানি না, আমি দিলীপবাবুর এই ধরনের মন্তব্যকে কখনওই সমর্থন করি না। এটা আমার কাছেও অসম্মানজনক।’