গতকাল মিটে গিয়েছে তৃতীয় দফার নির্বাচন। তবে আগের দু’দফার মত এই ভোটও কিছুটা রক্তক্ষয়ী। কোথাও ইট থেকে মাথা বাঁচাতে তৃণমূল প্রার্থীকে হেলমেট পরে বুথে যেতে হয়েছে, কোথাও আবার ভোট লুঠ আটকাতে গিয়ে একাধিকবার হামলার শিকার হতে হয়েছে তৃণমূল প্রার্থীকে। তৃতীয় দফার ভোটে এভাবেই দিনভর খবরের শিরোনামে ছিলেন আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল। সংবাদমাধ্যমের ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছিল, কীভাবে আরামবাগের আরান্ডিতে তাঁকে বাঁশ-লাঠি দিয়ে মারতে ছুটে আসে গ্রামবাসী। মাথায় বাঁশ দিয়ে মারা হয়, গাড়ি লক্ষ করে আধলা ইট ছোঁড়া হয়। শেষে প্রাণ বাঁচাতে ক্ষেতের উপর দিয়ে দৌড়ে পালান তৃণমূল প্রার্থী। তাঁকে বাঁচাতে দেহরক্ষী আগ্নেয়াস্ত্র বের করতে বাধ্য হন। কিন্তু দমেননি সুজাতা।
অথচ সেই ঘটনার কোনও উল্লেখই নেই পুলিশ সুপারের রিপোর্টে। কমিশনকে দেওয়া রিপোর্টে তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল-বিজেপি কর্মীদের মধ্যে হাতহাতি হচ্ছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সুজাতা। ছোটখাটো জখমের খবর মিলেছে। বাকি নির্বিঘ্নেই ভোট মিটেছে বলে দাবি করেছেন পুলিশ সুপার। এমনকী পুলিশ সুপারের আরও দাবি, সুজাতা গিয়ে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়ান। তাঁদের উত্তেজিত করেন। তখনই মারমুখী হয় জনতা। কিন্তু দিনভর টিভির পর্দায় যা দেখা গেল, তার সঙ্গে আকাশ পাতাল তফাৎ পুলিশ সুপারের এই রিপোর্টে।
যদিও তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলকে মারধরের ঘটনায় ইতিমধ্যে পাঁচজনকে আটক করেছে রাজ্য পুলিশ। তার আগে বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবেকে ফোন করেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সুজাতাকে আক্রমণের বিষয়ে অভিযোগ করেন তিনি। তারপরই সুজাতা কাণ্ডে রিপোর্ট তলব করে কমিশন। গ্রামে গিয়ে তদন্ত করে পুলিশ সুপার রিপোর্ট জমা দেন। কিন্তু সেই রিপোর্টে ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে কোনও মিলই পাওয়া যায়নি।