সিবিআইয়ের নতুন অধিকর্তা এম নাগেশ্বর রাও মোটেই ‘সুবোধ বালক’ নয়। ফলে ‘কীর্তি’রও শেষ নেই তাঁর। সিবিআও অধিকর্তা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পরই তাঁর ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়ল দুর্নীতির বেড়াল। পাশাপাশি আরএসএসের সঙ্গেও তাঁর সখ্যের কথা উঠে আসে সংবাদ শিরোনামে।
কিন্তু এবার কেঁচো খুড়তে বেরিয়ে পড়ল কেউটে। উঠে এল ১৯ বছর আগের একটি জনস্বার্থ মামলা। যে মামলার জন্য তাঁকে বদলিও করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও তিনি নতুন জায়গায় যেতে গড়িমসি করেছিলেন।
উড়িষ্যার বেরহামপুরে পুলিশ সুপার থাকার সময়ে একটি অনুষ্ঠানে রাও ভয়ঙ্কর কিছু কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মুসলিম, খ্রিস্টান ও মার্ক্সবাদীরা মানবাধিকারের পক্ষে বড় বিপদ।’ তাঁর এই মন্তব্যের জেরে সিপিএমের গঞ্জামের জেলা সম্পাদক আলি কিশোর পট্টনায়েক জনস্বার্থ মামলা করেন। মামলা হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে খোদ ডিআইজি তদন্ত করেছিলেন।
শুধু তাই নয়, উড়িষ্যা হাইকোর্ট সূত্রে পাওয়া সেই মামলার কপিতে দেখা গেছে, ১৯৯৮ সালের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নাগেশ্বর রাও যখন ওই বক্তব্য পেশ করেছিলেন, সে সময় তিনি শুধু পুলিশ সুপার নন, বেরহামপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ভাইস চেয়ারম্যান পদেও ছিলেন।
সেই জনস্বার্থ মামলায় বলা হয়েছে, রাও যে ভাষা ব্যবহার করেছেন, তা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের মনে বিদ্বেষ জাগিয়ে তোলার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক হানাহানিতেও মদত জোগাবে। ওই অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা তাঁকে বলেছিলেন অমন উস্কানিমূলক কথা না বলতে। তা সত্ত্বেও তিনি হিন্দুত্ববাদীদের উস্কানি দিয়েছিলেন।
এখানেই শেষ নয়, সিবিআইয়ের নবনিযুক্ত অধিকর্তা ১৯৯৪ সালে যখন নবরঙ্গপুর জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন, সে সময় ৪ মার্চ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তাঁর জেলার স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষককে চিঠি দিয়ে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করার কথা বলেছিলেন।
জনস্বার্থ মামলাটি হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। কেস নম্বর ৪৬৪৬। ওই মামলায় এসপি নাগেশ্বর রাওয়ের লেখা চিঠির প্রতিলিপিও যুক্ত করা হয়েছিল। যদিও পরে সে বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তবে তাঁর উস্কানিমূলক বক্তব্যের জন্য তাঁকে বেরহামপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।