ভোটের আগে ক্রমাগত অন্তর্দ্বন্দ্বে জর্জরিত গেরুয়াশিবির। এবার উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী সৌমেন রায়ের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁর প্রার্থীপদ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামলেন দলের একাংশের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় কালিয়াগঞ্জ শহরে। এদিন দফায় দফায় রাস্তা অবরোধ করে, টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। দলের ক্ষুব্ধ মহিলা কর্মীরা বলেন, “শীর্ষ নেতৃত্ব আমাদের বিধানসভা কেন্দ্রে দলের যে প্রার্থীকে বাছাই করেছে, তাঁর আচরণ মোটেই ঠিক নয়। বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ, যাঁকে দলের প্রার্থী করা হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে নানা রকমের অভিযোগ রয়েছে। এ ধরনের মানুষকে প্রার্থী করা হলে দলেরই বদনাম হবে।”
যদিও এ প্রসঙ্গে সৌমেনবাবুর প্রতিক্রিয়া জানতে বারবার ফোন করা হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ি অবশ্য বলেছেন, “দলের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রার্থী বাছাই করেছে। ফলে এব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই। দলের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত সকলকেই মেনে চলতে হবে।” উল্লেখ্য, কোচবিহারের তুফানগঞ্জের বাসিন্দা সৌমেন রায়কে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থী করার পরই আলিপুরদুয়ারের এক মহিলা নিজেকে তাঁর বৈধ স্ত্রী দাবি করে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানে তিনি সৌমেনবাবুর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন। ওই ভিডিও ভাইরাল হতেই আলোড়ন ছড়ায়। বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে জেলার বিজেপি নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, প্রার্থী হিসেবে সৌমেন রায়ের নাম ঘোষণার পর শুধু দলের নেতাকর্মীরাই নন, খোদ উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ি জানান, তিনি সৌমেনবাবুর নামই শোনেননি। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে রীতিমতো মাথাব্যথা বাড়ে বিজেপির অন্দরে। মঙ্গলবার রাতে সৌমেনবাবু রায়গঞ্জের এমজি রোডে অবস্থিত উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির কার্যালয়ে আসেন। বুধবার কালিয়াগঞ্জের একটি অনুষ্ঠান ভবনে দলের কর্মীসভায় তাঁর যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রায়গঞ্জ থেকে কালিয়াগঞ্জ যাওয়ার পথে রায়গঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়কের মদনপুর এলাকায় সৌমেনবাবুর লোকজনের উপর হামলা হয় বলে অভিযোগ। বিজেপির বিক্ষুব্ধ কর্মীরাই ওই হামলায় জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় বিজেপি নেতা তথা গত বিধানসভা উপনির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী কমলচন্দ্র সরকার বলেন, “আমরা ভূমিপুত্রকে প্রার্থী হিসেবে চাই। কালিয়াগঞ্জের দলীয় প্রার্থী হিসেবে আমরা সৌমেন রায়কে মেনে নিতে পারছি না। বিষয়টি নিয়ে আমরা দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি। সময় থাকতেই প্রার্থী বদল করা হোক। নতুবা দলেরই ক্ষতি হয়ে যাবে।”