উনিশের লোকসভায় জঙ্গলমহলে ভালো ফল করেছে বিজেপি। কিন্তু তারপরেও উন্নয়নের কাজ করেনি কিছুই। তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শোনা গেল সে কথাই। তিনি বলেন, ‘লোকসভার পর গত দু’বছর কোনও কাজই করেননি গেরুয়া শিবিরের সাংসদরা। করোনার লকডাউনে বিজেপি সাংসদদের দেখা পর্যন্ত মেলেনি। তাই ঝাড়গ্রামে বিজেপি ‘ঝাড়’ খেয়ে গিয়েছে। এবার এই জেলায় ৪-০ হবে। ২ মে’র পর বিজেপিকে খুঁজে পাওয়া যাবে না’।
সম্প্রতি সত্যিই জঙ্গলমহলে বিজেপির জনসভাগুলির হালকা ভিড় চিন্তা বাড়িয়েছে গেরুয়া শিবিরের। রাজ্য নেতাদের তো বটেই যোগী আদিত্যনাথের মতো কেন্দ্রীয় নেতাদের সভাতেও সেভাবে ভিড় হতে দেখা যায়নি। এমনকী, ঝাড়গ্রামের বুকে খোদ বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সভা বাতিল করতে হয়েছে। সেই প্রসঙ্গ তুলেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘আমি প্রথমেই ঝাড়গ্রামের মানুষকে ধন্যবাদ জানাই, কারণ আপনারা বিজেপিকে ঝাড় দিয়েছেন। এখন বাংলায় সভা করার আগে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাবতে হচ্ছে’।
এরপরই প্রত্যয়ী অভিষেকের ঘোষণা, ‘ঝাড়গ্রামে আমি এর আগেও এসেছি। মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ততা আগে দেখিনি। আমি নেত্রীকে গিয়ে দায়িত্ব নিয়ে বলব, ঝাড়গ্রামে ৪-০ হওয়া সময়ের অপেক্ষা। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আগামীদিনে রাজ্যে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে, আড়াইশোর বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরবে’।
গতকাল পুরুলিয়ার সভা থেকে আসল পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দাবি করেছিলেন, তৃণমূলের খেলা শেষ, এবার উন্নয়নের খেলা হবে। অভিষেক এদিন মোদীর সেই বক্তব্যের পালটা দিয়েছেন। তৃণমূল যুব সভাপতি এদিন প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনার হেলিকপ্টার যে ঝাড়গ্রামে নামছে, এটাই আসল পরিবর্তন। ২০১১’র আগে ক’বার দেখেছেন বুদ্ধবাবুকে জঙ্গলমহলে? আমরা যেমন ইংরেজকে ভারত ছাড়া করেছিলাম, তেমন বিজেপিকে বাংলা ছাড়া করতে হবে। যারা বাংলা ভাল করে বলতে পারেন না, তাঁদের নির্বাচনে হারাতে হবে’। অভিষেকের চ্যালেঞ্জ, ‘যে কোনও সময় আমি ওঁদের সঙ্গে উন্নয়ন নিয়ে তর্কে যেতে রাজি। আমার দিদি ১০ বছরে কী উন্নয়ন করেছে, আর তোমার মোদী ৭ বছরে কী কাজ করেছে, সেটা নিয়ে তর্ক হোক। উন্নয়নের নিরিখে লড়াই করে ১০-০ গোলে হারাতে না পারলে আমি রাজনীতির আঙিনায় পা রাখব না’।