রাজ্যের বিধানসভা ভোটের জন্য বৃহস্পতিবার শেষ চার দফা ভোটের ১৪৮টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। আর প্রথম চার দফার মতো এবারও প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরই বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ ফেটে পড়েছেন গেরুয়া শিবিরের কর্মীরা। এমনিতেই তৃণমূল থেকে গেরুয়া শিবিরে যাওয়া নেতা-মন্ত্রীদের প্রত্যেককে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ ছিলই। তা প্রতিদিনই আরও বেআব্রু হয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই কখনও দুর্গাপুর, কখনও দমদম, কখনও বা উত্তর দিনাজপুরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিজেপি কর্মীরা। সেই আঁচ এসে পৌঁছেছে কলকাতাতেও। আর এবার বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যকে রাজারহাট-গোপালপুরে প্রার্থী করা নিয়েও রীতিমতো পথে নেমেছেন দলীয় কর্মীরা। প্রথমে দমদম, তারপর রঘুনাথপুরেও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন গেরুয়া শিবিরের কর্মীরা। এমনকী এক বিজেপি কর্মীর মাথাও ফেটে যায় বাগুইহাটিতে।
রাজারহাট-গোপালপুরে যেমন শমীককে প্রার্থী করা নিয়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ, অপরদিকে পাশের কেন্দ্র দমদমেও দলীয় প্রার্থী বিমলশঙ্কর নন্দকে মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। কখনও টায়ার জ্বালিয়ে, কখনও বা দলীয় অফিসের আসবাবপত্র ভাঙচুর হয়েছে ওই দুই কেন্দ্রে। বলা বাহুল্য, প্রতি ক্ষেত্রেই সামনে এসেছে দলীয় কোন্দলের বিষয়টিই।
প্রার্থী তালিকা নিয়ে অসন্তোষে ফুঁসছে কোচবিহারের বিজেপি কর্মীরাও। অপরদিকে, বুনিয়াদপুরে দলীয় অফিসে তাণ্ডব চালিয়েছেন দলীয় কর্মীরাই। যে মালদার বেশিরভাগ আসনের দিকেই নজর ছিল বিজেপির, সেখানকারই হরিশ্চন্দ্রপুরে মতিউর রহমানকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে পারছেন না দলের একটা বড় অংশই। তাঁকে প্রার্থী করার প্রতিবাদে বিজেপি অফিসে ভাঙচুর, দলীয় পতাকা খুলে পুড়িয়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। একই অবস্থা রানাঘাট উত্তর পশ্চিম কেন্দ্রেও। সেখানকার প্রার্থী পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন বিজেপি কর্মীদের একটা বড় অংশই।
শুধুই বিক্ষোভ নয়, প্রার্থীতালিকা ঘোষণা হতেই দল ছাড়ার হিড়িক বেড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই দলের সব পদ ছেড়ে দিয়েছেন তপন শিকদারের ভাইপো সৌরভ শিকদার। এর আগেও প্রথম চার দফা ভোটের প্রার্থীতালিকা ঘোষণার পর বিজেপির হেস্টিংসের পার্টি অফিসেও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন কর্মীরা। বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল মুকুল রায়, সব্যসাচী দত্তদের। ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এবারও তা বজায় রয়েছে।
রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভের জেরে দিনকয়েক আগেই বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে দিল্লীতে তলব করেছিলেন অমিত শাহ। দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়েছিল বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভ। এবারও তার অন্যথা হল না। ফলে ভোটের একেবারে দোরগোড়ায় এসে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে।