এতদিন ধরে বিজেপি শিবির দাবি করছিল, মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়েই ‘সেফ সিটে’র খোঁজে ভবানীপুর থেকে সোজা নন্দীগ্রামে ‘হাই জাম্প’ মেরেছেন। গেরুয়া শিবির রীতিমতো প্রচারও শুরু করে দিয়েছিল, ভবানীপুর নিজের জন্য নিরাপদ নয় জেনেই ‘আন্দোলনের পীঠস্থান’ নন্দীগ্রামে প্রার্থী হচ্ছেন মমতা। তবে, এতদিন নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়া নিয়ে মমতাকে সেভাবে মুখ খুলতে শোনা যায়নি। তবে আজ, মঙ্গলবার প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার নন্দীগ্রামে পা রেখেই সেখানে প্রার্থী হওয়া নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তৃণমূলনেত্রী।
মমতা জানিয়ে দিলেন, সেফ সিটের খোঁজে নয়, মানুষের ভালবাসার টানেই নন্দীগ্রামে ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার নন্দীগ্রামের বটতলা হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে কর্মীসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “আমার তো ঘরের কেন্দ্র ছিল ভবানীপুর। আমাকে তো কিছুই করতে হত না। আমি তো ওখানেই থাকি। কিন্তু, আমি যেদিন শেষ এসেছিলাম, তখন নন্দীগ্রাম আসনটা খালি ছিল। তখন কিন্তু এখানে কোনও বিধায়ক ছিল না। তাই আমি তখন দেখতে চেয়েছিলাম এখানকার মানুষ আমাকে চায় কিনা। তেখালির সভা থেকে সেদিনই আপনাদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেছিলাম, আমি যদি এখানে প্রার্থী হই কেমন হবে? সেদিন মানুষের ভালবাসা আমাকে টেনে এনেছে। আপনাদের সেই ভালবাসা, সেই সাহস, সেই উদ্দীপনা, মা বোনেদের উৎসাহ আমাকে এখানে প্রার্থী হতে উৎসাহ দিয়েছে। আমার দু’চোখে শুধুই নন্দীগ্রাম।” এরই মাঝে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “নন্দীগ্রামে নির্বাচনের দিন ১ এপ্রিল। আমি বলছি, ওই দিন বিজেপি-সহ রাজ্যের সমস্ত বিরোধীদের এপ্রিল ফুল করে দিন।”
নিজের প্রার্থী হওয়ার রহস্য ফাঁস করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “গ্রামের দিকে আমার একটা টান বরাবরই আছে। আমার এবার মাথায় ছিল, আমি হয় সিঙ্গুর, না হয় নন্দীগ্রামে দাঁড়াব। কারণ এই দুটো জায়গা হল আন্দোলনের পীঠস্থান।” মঙ্গলবার আরও একবার তৃণমূল কর্মীদের কাছে প্রার্থী হওয়ার জন্য অনুমতি চেয়ে নেন মমতা। বলেন, “যদি আপনারা এখন মনে করেন আমার দাঁড়ানো উচিত নয়, তাহলে কাল আমি মনোনয়ন দেব না। যদি আপনারা মনে করেন, আমি আপনাদের ঘরের মেয়ে, তাহলেই আমি মনোনয়ন দেব। আপনারা বলুন কাল মনোনয়ন দেব তো?” প্রত্যাশিতভাবেই দর্শকাসন থেকে সেইসময় বিপুল সাড়া পেয়েছেন মমতা। আর সেই মানুষের ভরসার কাঁধে ভর করেই আগামীকাল মনোনয়ন পত্র জমা দেবেন তিনি।