২০১৯-এর ১৪ আগস্ট দিল্লীর সদর দফতরে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেম শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপর থেকেই গেরুয়া শিবিরের অন্দরে চলছে ‘যাত্রাপালা’। হামেশাই দেখা যায় দলের ওপর ‘গোঁসা’ করে বসে আছেন এই জুটি। আর তাঁদের মানভঞ্জনের জন্য ছুটে যাচ্ছেন রাজ্য নেতারা। তবে ভোটের আগে এবার শোভন-বৈশাখী জুটির বিরুদ্ধে কঠোর হতে দেখা গেল বিজেপি নেতৃত্বকে। সঙ্ঘ নেতাদের আপত্তিতে শোভনের ‘বিশেষ বান্ধবী’ বৈশাখীকে বিধানসভা ভোটে দলীয় প্রার্থী হিসেবে দাঁড় না করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই সেই সিদ্ধান্তের কথা শোভন ও বৈশাখী— দু’জনকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের এ হেন সিদ্ধান্তের কথা জানতে পেরে ফের ক্ষুব্ধ শোভন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৪ আগস্ট ‘বিশেষ বান্ধবীর’ হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিলেও সেই যোগদান খুব একটা সুখকর হয়নি শোভনের কাছে। নানা কারণে নতুন দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল তাঁর। দীর্ঘদিন ধরে দলীয় রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে বসেছিলেন তিনি। বিশেষ করে তাঁরই সঙ্গে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া বৈশাখীকে কোনও সাংগঠনিক দায়িত্ব দিতে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন শোভন। শেষ পর্যন্ত বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে কলকাতার প্রাক্তন মহানাগরিকের মান ভাঙাতে শোভন বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রাক্তন ছাত্রনেতা শঙ্কুদেব পাণ্ডার সঙ্গে তাঁকে কলকাতা সাংগঠনিক জোনের সহ পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়।
দায়িত্ব পেয়েই সক্রিয় হয়ে ওঠেন শোভন-বৈশাখী দুজনেই। দলের হয়ে মিছিল-সমাবেশ এমনকী পরিবর্তন রথযাত্রায়ও সামিল হয়েছিলেন দুজনে। কিন্তু ফের তাল কেটেছে। সূত্রের খবর, হাতের তালুর মতো চেনা বেহালা পূর্ব কেন্দ্রে নিজে দাঁড়াতে চেয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে আর্জি জানিয়েছেন শোভন। পাশাপাশি বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য দক্ষিণ কলকাতা কিংবা কলকাতা সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোনও আসনও চেয়েছিলেন তিনি। যদিও সেই আর্জি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। শোভনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তিনি তাঁর পছন্দসই যে কোনও আসন পাবেন। কিন্তু বৈশাখীকে টিকিট দেওয়া সম্ভব হবে না। আর এতেই বেজায় চটেছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। গত কয়েকদিন ধরে দলীয় কর্মসূচীতে তাঁর অনুপস্থিতি যেমন চোখে পড়েছে, তেমনি গত রবিবার মোদীর ব্রিগেড সমাবেশেও গরহাজির ছিলেন তিনি এবং বৈশাখী।